আগামী ২৬ জুন লোকসভার স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) স্পিকার নির্বাচনের নিজস্ব স্ট্র্যাটেজি রয়েছে। এদিকে বিরোধীদেরও রয়েছে বেশ কিছু দাবি। এমন প্রেক্ষাপটে স্পিকার নির্বাচন ঠিক কেন গুরুত্বপূর্ণ, সেটা সকলের জেনে রাখা দরকার।
স্পিকার নির্বাচন কার জন্য, কেন গুরুত্বপূর্ণ?
লোকসভার স্পিকার নির্বাচন ক্ষমতাসীন এবং বিরোধী দল উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপির লক্ষ্য এটাই হবে যে, স্পিকার নির্বাচনের মাধ্যমে এনডিএ-র সমস্ত শরিকরা যে একজোট আছে, সেই বার্তা দেওয়া। একই সঙ্গে স্পিকার নির্বাচনের সময় ডেপুটি স্পিকার পদ দিতে সরকারকে বাধ্য করাই বিরোধীদের কৌশল।
উদিত রাজ থেকে সঞ্জয় রাউত... INDIA ব্লকের বিভিন্ন দলের নেতারা ইতিমধ্যেই এই নিয়ে নানা বিবৃতি দিয়েছিলেন। তাঁরা বলছেন, স্পিকারের পদের বিষয়ে NDA-র শরিক টিডিপি এবং জেডিইউ-এর উচ্চাকাঙ্ক্ষায় ইন্ধন দেওয়াই মূল কৌশল হিসাবে নেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই বিজেপি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দিয়েছে। জোটের শরিক দল ও বিরোধী দলগুলির সঙ্গে স্পিকারের বিষয়ে মতৈক্য তৈরি করাই তাঁর কাজ।
জেডিইউ ও টিডিপির অবস্থান কী?
স্পিকার নির্বাচনের বিষয়ে এনডিএ-র শরিকরা বিজেপিকে কার্যত 'ফ্রি-হ্যান্ড' দিয়েছে। স্পিকার পদের জন্য বিজেপি মনোনীত সাংসদকে সমর্থন করার কথা বলছে এনডিএ-র সাংসদরা। জেডিইউ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে স্পিকার পদের জন্য বিজেপি যারই নাম দেবে, দল তাকেই সমর্থন করবে। একইসঙ্গে, টিডিপির জাতীয় মুখপাত্র পট্টাভিরাম কোমারেডিও বলছেন, এনডিএ-এর সাংগঠনিক দলগুলি একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে কে আমাদের প্রার্থী হবেন। সর্বসম্মতিক্রমে যাঁর নাম ঠিক করা হবে, টিডিপি সহ সমস্ত জোট তাঁকেই সমর্থন করবে।
স্পিকার নির্বাচন নিয়ে এখন ছবিটা কেমন?
লোকসভার স্পিকার নির্বাচনের আর দু'দিন বাকি। ক্ষমতাসীন এনডিএ এখনও পরবর্তী স্পিকারের নাম ঠিক করতে পারেনি। একই সঙ্গে বিরোধী জোটও তাদের দাবিতে অনড় রয়েছে। ডেপুটি স্পিকার পদ না দিলে উভয় পদেই প্রার্থী দেবে তারা। শাসক দলের অবস্থান দেখে বলা হচ্ছে, NDA-র বিরোধীদের ডেপুটি স্পিকার পদটা দেওয়ার প্ল্যান সম্ভবত নেই। যদিও টিডিপিকে ডেপুটি স্পিকার পদ দেওয়া হচ্ছে বলে জল্পনা চলছে।তারা স্পিকার পদের দাবি করছে বলেও রাজনৈতিক মহলে কথা রটছে। বলা হচ্ছে, স্পিকার পদ বিজেপিই নিজের কাছে রাখবে। জেডিইউ ইতিমধ্যেই রাজ্যসভায় ডেপুটি চেয়ারম্যানের পদ ধরে রেখেছে।
স্পিকার নির্বাচনের ঐতিহ্যে বদল?
যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে বিরোধীরাও লোকসভার স্পিকারের জন্য প্রার্থী দেয়, সেক্ষেত্রে এই পদের জন্য এই প্রথমবার নির্বাচনের প্রয়োজন শুরু হবে। এমনটা হলে সর্বসম্মতিক্রমে স্পিকার নির্বাচনের যে রেওয়াজ এতদিন চলে আসছে, সেটাও ভেঙে যাবে। স্বাধীনতার পর থেকে লোকসভার স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন সর্বসম্মতিক্রমেই হয়ে আসছে। স্পিকার পদটি ক্ষমতাসীন দলের হাতেই থাকে। ডেপুটি স্পিকারের পদ বিরোধীদের হাতে থাকে।
লোকসভার সংখ্যা খেলা
লোকসভার সংখ্যার খেলাটা কেমন? ২০১৪ বা ২০১৯ সালের তুলনায় এবারের ছবিটা অন্যরকম হবে। এনডিএ-র নেতৃত্বাধীন বিজেপি ২৪০টি আসন নিয়ে বৃহত্তম দল বটে। কিন্তু ২৭২-এর ম্যাজিক ফিগার পায়নি। লোকসভায় NDA-র আসন সংখ্যা ২৯৩। এদিকে বিরোধী কংগ্রেস ৯৯টি আসন জিতেছিল। রাহুল গান্ধী দু'টি আসন থেকে জিতেছিলেন, তাই সাংসদের সংখ্যা ৯৮। ওয়েনাড আসন ছেড়েছেন রাহুল। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া ব্লকের ২৩৩ জন সাংসদ রয়েছে।