লোকসভা নির্বাচনের আগে নীতীশ কুমারকে নিয়ে 'অস্বস্তি'তে বিজেপি বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'। আবার বিজেপির হাত ধরতে পারেন নীতীশ। ফের পালাবদল হতে পারে বিহারে। এই আবহে নীতীশকে নিয়ে মুখ খুলল তৃণমূল। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, 'নীতীশ যদি এনডিএতে শামিল হন, তা হলে কোনও সমস্যা হবে না। এতে বরং তেজস্বী যাদবেরই ভোটের কাজে সুবিধা হবে।' শুক্রবার তৃণমূল সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। নীতীশ জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বলেও মনে করছে বাংলার শাসকদল।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে মোদী বাহিনীকে হঠাতে বিজেপি বিরোধী জোট তৈরি হয়েছে। কিন্তু আসন সমঝোতা নিয়ে ইতিমধ্যেই ধাক্কা খেয়েছে 'ইন্ডিয়া'। এর মধ্যেই বিহারে নীতীশকে নিয়ে আরও জটে জোটশিবির। নীতীশকে জোটের আহ্বায়ক করা নিয়েও আলোচনা চলছিল। যদিও সেই প্রস্তাবে নীতীশ রাজি হননি বলে জানা গিয়েছিল। এর পর পরই বিহারে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়েছেন নীতীশ।
ইন্ডিয়া টুডে সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ফের বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে বিহারে নতুন সরকার গড়তে পারেন নীতীশ। সেই সরকারে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আগামী ২৮ জানুয়ারি শপথ নিতে পারেন নীতীশ। উপমুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন বিজেপির সুশীল মোদী। অন্য দিকে, বিহারে পাল্টা সমীকরণ গড়তে তৎপর হয়েছেন লালুপ্রসাদ যাদবও। সরকারে থাকতে জিতন রাম মানঝিক পুত্রকে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন আরজেডি প্রধান। শুক্রবার সূত্র মারফত এই খবর জানা গিয়েছে। বিহার বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১২২। তাই ১২২ জন বিধায়কের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে লালু শিবিরও। অন্য দিকে, শুক্রবার রাজভবনে গিয়েছিলেন নীতীশ।
সম্প্রতি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরী ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। যাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নীতীশ। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসাও করেছেন নীতীশ। এর পরই কর্পূরী ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে এক সভায় নীতীশ বলেছেন যে, তাঁর দল স্বর্গীয় নেতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে। পরিবারের কাউকে দলে পদ দেওয়া হয়নি। নীতীশের এই বক্তব্য বিহারে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে। কেননা, আরজেডির সঙ্গে জোটে রয়েছে নীতীশের দল। আর আরজেডিতে, লালুর পুত্রই গুরুদায়িত্বে রয়েছে। তাই নীতীশের এই বক্তব্য আরজেডির উদ্দেশে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। নীতীশের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর এক্স হ্যান্ডলে লালু-কন্যা লিখেছেন, 'অনেকেই নিজেদের ত্রুটিগুলি দেখতে পান না। কিন্তু নির্বোধের মতো অন্যদের দিকে কাদা ছোড়ে।' এর ফলে আরজেডি এবং জেডিইউয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
এর আগে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, এনডিএ-তে ফেরার প্রস্তাব যদি দেয় জেডিইউ, তা হলে তা বিবেচনা করা হবে। শাহের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই নীতীশকে ঘিরে জোর জল্পনা দানা বেঁধেছে। অতীতে এনডিএ-র শরিক ছিল জেডিইউ। ২০২২ সালে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে এনডিএ ত্যাগ করেন নীতীশ। হাত মেলান লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডির সঙ্গে। বিহারে তৈরি হয় জোট সরকার। তার ঠিক প্রায় ২ বছরের মাথায় আবার নীতীশকে ঘিরে জল্পনা তৈরি হল।