সংসদে শীতকালীন অধিবেশন বয়কট করার পথে হাঁটতে চলেছে বিজেপি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলি। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতার দফতরে বৈঠকের পরই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মঙ্গলবারই দিল্লিতে একটি হোটেলে চতুর্থবার বৈঠকে বসছেন ইন্ডিয়ার নেতারা। আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে এই বৈঠকে।
সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহ থেকেই তেতে রয়েছে সংসদের দুই কক্ষ। এই ইস্যুতে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জেরে বিরোধী দলের মোট ৯২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। তারই ফল স্বরূপ এ বার শীতকালীন অধিবেশন বয়কটের ভাবনা ইন্ডিয়ার। ৯২ জন নিলম্বিত সাংসদের মধ্যে লোকসভার ৩৩ জন এবং রাজ্যসভার ৪৫ জন সাংসদ রয়েছেন। এক দিনে এই প্রথম এত সংখ্যক সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল।
বুধবার সংসদে কী ঘটেছিল?
বুধবার দুপুরে সংসদে অধিবেশন চলছিল। সেই সময় আচমকাই দর্শকদের গ্যালারি থেকে দু'জন ঝাঁপ দেন। এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে যান সাংসদেরা। ছিটকে সরে গিয়ে সাংসদেরা দেখেন যে, চারদিকে হলুদ রঙের গ্যাস বেরোচ্ছে। দুই যুবকের হাতে ছিল রং বোমা। এই দুই যুবকের নাম সাগর এবং মনোরঞ্জন। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দিকে, সংসদের বাইরে স্প্রে নিয়ে ঘুরছিল আরও দু'জন। পুলিশ সূত্রে খবর, পরিবহণ ভবনের সামনে থেকে এক মহিলা-সহ ২ জনকে পাকড়াও করা হয়েছে। তাঁদের নাম অমল এবং নীলম। এই চার জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সংসদে তাণ্ডবের ঘটনায় শনিবার আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। এই নিয়ে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হল। ধৃতের নাম মহেশ কুমাওয়াত। সংসদে তাণ্ডবের ঘটনায় মহেশ যুক্ত বলে দাবি করেছে পুলিশ। রাজস্থানের নাগাউরের বাসিন্দা মহেশ। গত ১৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে এসেছিলেন মহেশ। পুলিশ সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে পালিয়ে রাজস্থানে মহেশের ডেরাতেই ছিলেন ললিত। চার অভিযুক্তের মোবাইল ফোন নষ্ট করতে ললিতের সঙ্গে হাত লাগিয়েছিলেন মহেশও। সংসদকাণ্ডে ধৃত নীলমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল মহেশের। গত বৃহস্পতিবার ললিতের সঙ্গে থানায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি। ললিতের গ্রেফতার শুক্রবার রেকর্ড করা হয়। শনিবার মহেশকে গ্রেফতারের খবর জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন তিনি। অন্য দিকে, এই ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেই দায়ী করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। মোদী সরকারের নীতির জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে বলে কটাক্ষ করেছেন সনিয়া-পুত্র। এই ঘটনায় বাংলার কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, ললিত পশ্চিমবঙ্গে থাকতেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় আলোচনার দাবিতে সরব বিরোধী সাংসদেরা।