India Today East Conclave 2021-এ যোগ দিয়ে প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিংয়ের পরামর্শ দিলেন, চীনের ট্র্যাক রেকর্ড কিন্তু ভাল না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ইন্টেলিজেন্সে আরও জোর দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এদিন সকালেই রাজনাথ সিং সংসদে জানিয়েছেন, প্যাংগং হ্রদ নিয়ে চীনের সঙ্গে বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় তিনি আরও জানান, দুই দেশই নিজেদের সেনা পিছিয়ে নেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিন India Today East Conclave 2021-এ 'ফ্ল্যাশপয়েন্ট: ব্রিচড বর্ডারস: ইন্ডিয়াজ চায়না পলিসি- কমব্য়াট অর কম্প্রোমাইজ?' শীর্ষক আলোচনায় আংশ নিয়েছিলেন সাংসদ তাপির গাও, প্রাক্তন সাংসদ নিনং এরিং, প্রাক্তন কূটনীতিবিদ রাজীব ডোগরা এবং প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিং। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শিব অরুর।
প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিং বলেন, এটা খুবই সমসাময়িক বিষয়। আগে চীন এলে দৌত্য করে মিটিয়েছি। চীনের চ্য়ালেঞ্জ আমরা নিয়েছি। আমি আশাবাদী। এটা ভাল শুরু। আমরা যাতে প্রস্তুত থাকি, সেটাও দেখতে হবে। চীনের ট্র্যাক রেকর্ড কিন্তু ভাল না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। চীনের নেতারাও চাপে ছিলেন। ইন্টেলিজেন্সে আরও জোর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ফিঙ্গার ৮-এ গিয়েছিলাম। পরে সরে এসেছে। তারা আসে আর যায়। এবার এসে আর যায়নি। তাই চ্যালেঞ্জ। আমার মনে হয় রাজনৈতিক এবং সেনার বড় কৃতিত্ব রয়েছে। চীনাদের যদি ভয় না থাকত, তা হলে সরে যেত না। তারা বুদ্ধিমত্তার কাজ করেছে আমাদের প্রতিরোধ দেখে। পাহাড়ে থাকা খুবই কষ্টকর। ১৯৯৩ সাল থেকে ভেবে আসছি শান্তি চুক্তি কাজ দেবে। ওঁদের ৫টি দল থাকলে আমদের ২০ দল থাকে। চীনা আগ্রাসনকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়। আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। চীনের নেতাদের পিছিয়ে দিতে ভাল সাহায্য করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। স্মার্ট ব্যবস্থা করতে হবে। কী করে এগোচ্ছে চান, তা নজরে রাখতে হবে। আমাদের পরিকল্পনা তৈরি রাখতে হবে।
সাংসদ তাপির গাও বলেন, ভারত চীনকে অনেক দিন ধরেই দেখছে। আমরা তাদের আর্থিক, সেনার ব্যাপার দেখেছি। যেখানে সমস্যা ছিল, আমি সেখানে গিয়েছিলাম। এটা একটা উদাহরণ যেখানে ভারতকে শেখার আছে কী করে চীনের বিষয় সামলাতে হবে। মোদীজি প্রতিরোধ দেখিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, চীনের সেনারা ঢুকে পড়ত প্রতি বছর। কংগ্রেস সত্যি লুকোয়। মোদী কিছু লুকোন না। গালোয়ান, প্য়াংগং, জোকলাম, সিকিম নাথুলা পাস, কিছুই না। সেনা, আধা সেনাকে দোষ দিতে চাই না। রাজনীতি করতে চাই না। অ্যান্টনি বলেছিলেন, কোনও রাস্তা বানাচ্ছি না। আমাদের ম্যাকমোহন লাইন মেনে চলতে হবে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এলওসি মেনে চলতে হবে। সীমান্তে ভাল পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। বাড়ি, ওষুধ সব দিতে হবে। নাগরিকদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
প্রাক্তন সাংসদ নিনং এরিংয়ের মত, আমাদের একটা সুযোগ দরকার ছিল। এটা ভাল সুযোগ, ঠিক কথা। আমাদের দায়িত্ব দেখাতে হবে। আমরা এখন আমাদের জায়গা, ওঁরা ওঁদের জায়গায় এসেছি। চীন আগে তো মানচিত্র মেনে নিয়েছিল। তিব্বত আলাদা রাষ্ট্র ছিল। এ দেশে থেকে ঘুরে যাওয়ার পর ভারতীয় সেনা মারা গেল। হিন্দি চিনি ভাই ভাই বললেই হবে। রাস্তা বানালে ওঁরা চলে আসবেন। কিন্তু ওঁরা তো এসে গিয়েছেন। মনমোহন ২০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিলেন রাস্তা বানানোর জন্য।
প্রাক্তন কূটনীতিবিদ রাজীব ডোগরা বলেন, দীর্ঘমেয়াদি কৌশল দরকার। আমি ভেবেছিলাম চীনের আগ্রসন নিয়ে কথা বলব। তবে একদিনে কতটা ফারাক হল। চীন একদিনে সরে গেল? সহজ কারণ। আমাদের জওয়ানরা লড়ে গিয়েছে। দক্ষিণ চীনে সাগরেও সমস্যা রয়েছে। একটা বিশাল পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ঘটনা ঘটছে। চীন কিছু দখল করলে কখনও ছেড়ে তো দেয় না।
তাঁর মতে, তাদের দাবি ঠিক না ভুল, সেটা পরের কথা। চীন লাদাখ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে ধাক্কা খেয়েছে। এখন আমাদের মেপে চলতে হবে। প্রস্তুতি ছাড়া মাঠে নামা ঠিক হবে না। বার্মার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকে সতর্ক করেছিলেন, চৌ এন লাইকে ভরসা করা ঠিক হবে না। ভরসা তো করা হয়েছে।