১৬ জানুয়ারি অর্থাৎ আগামী শনিবার থেকেই ভারতে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে। নিজেই এনিয়ে আগে ট্যুইট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টিকা দেওয়ার কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি করতে সোমবার সপ্তাহের শুরুর দিন দেশের সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। যেখানে হাজির ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন ও পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার তৈরি কোভিশিল্ডে ছাড়পত্র দিয়েছে ওষুধ নিয়ন্ত্রক ডিসিজিআই। তারপর এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী। ভ্যাকসিনের অনুমোদন মিললেও তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে সাধারণের মধ্যে। সেই নিয়ে শঙ্কা দূর করতে মোদী বলেন, 'দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে যাবতীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। ভ্যাকসিনে যাবতীয় সতর্কতা নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।'
প্রধানমন্ত্রীর কথায় য়ে ২টি ভ্যাকসিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে দু’টিই মেড ইন ইন্ডিয়া। ভবিষ্যতে আরও ভ্যাকসিন এলে নতুন করে পরিকল্পনা করা হবে।‘ তবে আপাতত ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া টিকাকরণে প্রথম দফায় শুধুমাত্র প্রথমসারির করোনাভাইরাস যোদ্ধাদের টিকা প্রদান করা হবে। সেই তালিকায় থাকবেন না জনপ্রতিনিধিরা। প্রথম দফায় প্রথমসারির করোনা যোদ্ধারা টিকা পাবেন। তাঁদের মধ্যে আছেন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী, পুলিশ, সুরক্ষা বাহিনী, অন্যান্য আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ান-সহ অন্যান্য প্রথমসারির করোনা যোদ্ধারা। মোদী বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে প্রায় তিন কোটি স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রথমসারির করোনাভাইরাস যোদ্ধাকে টিকা প্রদান করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং ৫০-এর কম বয়সি কো-মর্বিডিটি রোগীকে টিকা দেওয়া হবে।’ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। মোদী দাওয়াই দিয়েছেন , ‘টিকাকরণের তথ্য সঠিক সময়ে আপলোড করতে হবে।' ভারত যা করছে আগামী অনেক দেশ তা অনুসরণ করবে।
একইসঙ্গে মোদী জানান, সব রাজ্য মিলিয়ে তিন কোটির মতো স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রথমসারির করোনাভাইরাস যোদ্ধা আছেন। তাঁদের টিকাকরণের জন্য রাজ্যকে এক পয়সাও খরচ করতে হবে। করোনা যোদ্ধাদের বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার জন্য যাবতীয় খরচ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। বিশ্বের কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যে টিকাকরণ শুরু হলেও ভারতকে কয়েকমাসের মধ্যে ৩০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। দেশের জনসংখ্যার কথায় মাথায় রেখেই এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে বলেই জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাই গোটা প্রক্রিয়ায় গুজব ছড়ানোর মত ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সতর্ক থাকার কথা মনে কিরয়ে দিয়েছেন মোদী। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলির হাতেই দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের এই বিশাল টিকাকরণ অভিযানে বাইরে থেকে বাধা আসতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে আগামী দিনে টিকাকরণের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশ ভারতকেই অনুসরণ করবেন এমন কথাও শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনার সঙ্গে অন্য ভ্যাকসিনের কাজও চলবে। এদিন কোরনার পাশাপাশি বার্ড ফ্লু নিয়েও মানুষকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের ৯ রাজ্যে বার্ড ফ্লুর ছড়ানোর ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া নজর রাখার কথা বলেছেন মোদী। বার্ড ফ্লু নিয়েও যাতে গুজব না ছড়ায় সেবিষয়ে সতর্ক হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।