বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর বেশি হামলা চালানো হচ্ছে, যা উদ্বেগের বলে মঙ্গলবার রাজ্যসভায় জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এদিন রাজ্যসভায় বাংলাদেশ নিয়ে বিবৃতি দিয়ে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ আমাদের খুব কাছের। জানুয়ারি মাস থেকে সেখানে উত্তেজনা রয়েছে। জুন-জুলাইয়ে হিংসা শুরু হয়। সেখানকার রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগায়োগ রেখেছিলাম। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও বাংলাদেশে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। শেখ হাসিনাকে ইস্তফা দিতে হল। ৪ অগস্ট পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। অধিকাংশ হামলা চালানো হয়েছে সংখ্যালঘুদের উপর, যা উদ্বেগের।' পরে লোকসভাতেও বিবৃতি দিতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'মন্দির, সংখ্যালঘুদের দোকানে হামলা চালানো হচ্ছে, যা উদ্বেগের।'
১৫ বছরের শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটেছে সোমবার। শাসনভার এখন সেনার হাতে। সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদে হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই পদ্মার ওপারে অশান্তি নতুন মাত্রা নিয়েছে। হামলা, লুঠ, খুনোখুনি চলছে। বাংলাদেশের সংবাদপত্র দ্য ডেইলি স্টার সূত্রে খবর, ২৭টি জেলায় হিন্দুদের বাড়ি, দোকানে হামলা চালানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় সোমবার সন্ধ্যায় তেলিপাড়া গ্রামে প্রদীপ চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। মুহিন রায় নামে এক ব্যক্তির কম্পিউটারের দোকানও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামে ৪ হিন্দু পরিবারে হামলা, লুঠ চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। হাতিবাঁধা উপজেলার পূর্ব সরডুবি গ্রামে ১২টি হিন্দু ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। মেহেরপুরে ইস্কনের মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।
রাজ্যসভায় এদিন বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, 'বাংলাদেশে প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয় রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৯ হাজার পড়ুয়া। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।'
শেখ হাসিনার ভারতে আসা প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'কম সময়ের নোটিশে ভারতে আসার অনুরোধ করেছিলেন শেখ হাসিনা। গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লিতে আসেন তিনি।'
সূত্রের খবর, ভারতে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে হাসিনাকে। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠক করে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই বৈঠকে হাসিনাকে নিয়ে কথা হয়েছে বলে খবর। এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, 'বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্থির করতে হাসিনাকে সময় দিতে চায় সরকার।'