বরফের দেশে আগুন! কাশ্মীর উপত্যাকার কথা মনে এলেই চোখে ভেসে ওঠে শুধু বরফ আর বরফ। আর সেই কাশ্মীরেই কী না তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি! সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, কাশ্মীর উপত্যকায় তীব্র তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যা চলতি জুলাই মাসে কাশ্মীরবাসীর জন্য একেবারেই অন্যরকম অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে।তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। এই পরিস্থিতিতে ছোটদের স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য আগামী দু’দিন স্কুল বন্ধ থাকবে।
কাশ্মীর প্রশাসন রবিবার যে নির্দেশিকা জারি করেছে, তাতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, তীব্র গরমের কারণে ২৯ এবং ৩০ জুলাই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত স্কুল বন্ধ থাকবে। তবে, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মচারীদের জন্য এই ছুটি কার্যকর হবে না। সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল উভয় ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে।
গত কয়েক দিন ধরে কাশ্মীরে তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকছে। রবিবার তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল ৩৬ ডিগ্রি, যা চলতি মরসুমে সর্বোচ্চ। কাশ্মীরে জুলাই মাসে এত তাপমাত্রা সাধারণত দেখা যায় না। শেষ বার জুলাইয়ে কাশ্মীরের তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি ছাড়িয়েছিল ১৯৯৯ সালে। এই হিসাবে রবিবার গরমে ২৫ বছরের নজির ভেঙেছে কাশ্মীর। ১৯৯৯ সালের ৯ জুলাই তাপমাত্রা হয়েছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে, কাশ্মীরের জুলাই মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নজির রয়েছে ১৯৪৬ সালে। সে বার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এখনও পর্যন্ত আর কখনও হয়নি।
কাশ্মীরে সাধারণত তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে থাকে। জুলাই মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে উপত্যকার তাপমাত্রা পৌঁছে যায় -১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নীচে। যেকারণে স্বাভাবিকভাবেই ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাশ্মীরের মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়েছেন। প্রচণ্ড গরম এবং বৃষ্টির অভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, আগামী দু’দিনের মধ্যে উপত্যকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, উপত্যকার মানুষের কাছে এই তাপপ্রবাহ খুবই অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে। গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে প্রশাসন বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে। স্কুল বন্ধ করা ছাড়াও, অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সকলেই আশায় রয়েছে, দ্রুত বৃষ্টির মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে এবং উপত্যকার মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন।