কলকাতার আরজিকার হাসপাতালে এক মহিলা ডাক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি এবং এরই মধ্যে হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বুধবার রাতে। মেডিক্যাল কলেজের রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতাল প্রশাসন প্রমাণ লোপাট করেছে। ভাঙচুরের ভিডিওটি শেয়ার করে তাঁরা বলেন, 'সেমিনার হল ভাঙচুর করা হয়েছে।'
আবারও ধর্মঘটের ঘোষণা
এর আগেও ফোরডা (ফেডারেশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন) ধর্মঘট ডেকেছিল, যার প্রভাব সারা দেশের হাসপাতালগুলিতে দেখা গিয়েছিল, কিন্তু আরজি কর হাসপাতালে হিংসা ও ভাঙচুরের কারণে বুধবার রাতে ফের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। FORDA বলেছে যে সরকার কাজের সময় স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই এই বিষয়ে ব্যর্থ হয়েছে, যার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। সরকার আমাদের প্রতিশ্রুতি ও সেবাকে যথাযথ সম্মান দিতে পারছে না, এটাই তার বড় ব্যর্থতা। FORDA বলেছে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর গুরুত্ব এবং ন্যায়বিচারের দাবি বিবেচনা করে আমরা অবিলম্বে ধর্মঘট পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর জন্য আমরা রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আরডিএ) এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করছি।
৯ অগাস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছরের এক মহিলা আবাসিক চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। শরীরের অনেক জায়গা থেকে রক্ত ঝরছিল। ঘাড়ের হাড়ও ভাঙা ছিল তাঁরা। ট্রেনি চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সঞ্জয় রায় নামে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। সঞ্জয় ১৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তবে চিকিৎসকদের ক্ষোভ থেমে নেই। তারা ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই এই মামলার তদন্তভার সিবিআই-কে হস্তান্তর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমানে সিবিআইয়ের একটি দল কলকাতায় পৌঁছেছে।
বুধবারের রাতের ঘটনা নিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় ৪০ জন দুর্বৃত্ত বিক্ষোভকারীদের ছদ্মবেশে হাসপাতালের চত্বরে প্রবেশ করে। সেখানে উপস্থিত পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে ও ভাঙচুর চালানো হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে হয়। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্বৃত্তরা লাঠি, ইট ও রড নিয়ে এসেছিল। দুর্বৃত্তরা এলাকার ও আশপাশের বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরাও ভেঙে দেয় এবং জুনিয়র ডাক্তাররা যেখানে বিক্ষোভ ও ধর্মঘটে বসেছিলেন সেই মঞ্চটিও ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় পুলিশের একটি গাড়ি উল্টে যায় এবং সেখানে রাখা বেশ কয়েকটি দুচাকার গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন।