Advertisement

দুর্বল ভেবে সেনা পাঠান আয়ুব, শাস্ত্রীর হুঙ্কারে হারাতে বসেছিলেন লাহোর!

Lal Bahadur Shashtri death: শাস্ত্রী দুর্বল নেতা এই ভেবে কাশ্মীর ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা সেরে ফেলেছিলেন আয়ুব। কিন্তু এমন জবাব যে আসবে প্রত্যাশা করতে পারেননি। পরে গুণমুগ্ধ হন শাস্ত্রীর শৌর্যের।

আয়ুব খান ও লালবাহাদুর শাস্ত্রী।
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 11 Jan 2022,
  • अपडेटेड 2:47 PM IST
  • ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি মৃত্যু লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর।
  • তাসখন্দে যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষর।
  • মার্কিন হুঁশিয়ারিতেও দমে যাননি শাস্ত্রী।

অল্প সময়ের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। তা সত্ত্বেও দেশের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে নিশ্চিতভাবে নাম থাকবে তাঁর। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মুন্সিয়ানায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ১৯ মাসের কার্যকালের মধ্যে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধ হয়েছিল। 

আয়ুব খান ছিলেন ৬ ফুট ২ ইঞ্চির লম্বা-চওড়া পুরুষ। অন্যদিকে, গান্ধীবাদী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ছোটখাট চেহারার মানুষ। নেহরুর মৃত্যুর পর তাঁর জুতোয় পা গলানো চাট্টিখানি কথা নয়! সেটাই করে দেখিয়েছিলেন লাল বাহাদুর। কিন্তু প্রথম দিকে তাঁকে বিশেষ পাত্তা দিতে চায়নি গোটা দুনিয়া। এমনকি কংগ্রেসের অন্দরেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আয়ুবও সেই দলেই ছিলেন। নাক উঁচু ভাব। কোথাকার কোন শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন না। বাতিল করলেন দিল্লি সফর। 

আয়ুব না আসতে চাইলেও পাকিস্তান যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। ১৯৬৪ সালে কায়রোতে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন (NAM)সেরে দেশে ফিরছিলেন তিনি। অবতরণ করেন করাচি বিমান বন্দরে। করাচিতে আটকে দেওয়া হয় শাস্ত্রীকে। আয়ুব খান দেখা করতে রাজি নন। ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ লিখেছেন, ''আয়ুব তাচ্ছিল্যের সুরে তাঁর এক ঘনিষ্ঠকে বলেছেন, এই লোকটাই নেহরুর জায়গায় এসেছে!''

শাস্ত্রী দুর্বল নেতা এই ভেবে কাশ্মীর ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা সেরে ফেলেছিলেন আয়ুব। ১৯৬৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসনকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ দিয়েছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করেন আয়ুব। তিনি চেয়েছিলেন, কাশ্মীর দখলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন বাধা না হয়। দুই দেশ কাছাকাছি আসলে তা সম্ভব নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারতে না আসায় মনঃক্ষুন্ন হন শাস্ত্রী। ওই বছরেই কানাডায় গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ওয়াশিংটন ডিসি-তে তাঁকে আসার আমন্ত্রণ জানান লিন্ডন জনসন। সেই আমন্ত্রণ রক্ষা না জবাব দিয়েছিলেন লাল বাহাদুর। 

Advertisement

ভারতীয় ভূখণ্ড দখলে পাকিস্তান সেনা অভিযান শুরু করে। জবাব দেয় শাস্ত্রীর ভারত। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ২৬ সেপ্টেম্বর দিল্লির রামলীলা ময়দানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ''প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান দিল্লির উদ্দেশে হাঁটা দেবেন বলে জানিয়েছেন। উনি সম্মানীয় ব্যক্তি। দিল্লি পর্যন্ত হাঁটলে ওঁর কষ্ট হবে। আমরাই বরং লাহোর গিয়ে ওঁকে স্বাগত জানাব।''    

তার আগে ১৯৬৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী জানিয়েছিলেন,''বাধ্য হয়েই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ভারত।''   

পাকিস্তানের পরাজয় ঠেকাতে ভারতকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হুমকি দিয়েছিলেন, কথা না শুনলে ভারতে গম পাঠানো বন্ধ করে দেবেন। দমে যাননি ছোটখাট চেহারার ভারতের সিংহহৃদয় প্রধানমন্ত্রী। দেশবাসীর কাছে আবেদন করেছিলেন, এক বেলার খাবার খান। 

আরও পড়ুন- বেলুড়ে বিবেক-জন্মদিবস পালনে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন PM মোদী

১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দুই দেশ। তার ১২ ঘণ্টার মধ্যে ভারতে ফিরে আসার বিমানেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় শাস্ত্রীর। 

পাঠানের সঙ্গে টক্কর দিয়েছিলেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী। যুদ্ধ জয়ের নায়কের প্রতি আয়ুব খান এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তাঁর নির্দেশে পাকিস্তানের সমস্ত ভবনে অর্ধনমিত থাকে জাতীয় পতাকা। ১১ জানুয়ারি প্রথম বিদেশি রাষ্ট্রনেতা হিসেবে শাস্ত্রীর বাড়িতেও হাজির হন আয়ুব খান। বলেছিলেন,''এই লোকটাই ভারত-পাকিস্তানকে কাছাকাছি আনতে পারত।''       

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর শেষযাত্রায় সামিল হয়েছিলেন সোভিয়েত রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সি কোসিজিন ও আয়ুব খান। তাঁর শবদেহ কাঁধেও নিয়েছিলেন। 

আরও পড়ুন- CM-দের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে PM, করোনা রুখতে পদক্ষেপ করবেন?

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement