কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনে (Karnataka Assembly Elections Result 2023) জয়ে শুধু কুর্সিতেই ফিরল না কংগ্রেস (Congress), বিরোধীদের কাছে রাতারাতি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল। মোদ্দা বিষয়, বিরোধী রাজনীতিতে এই মুহূর্তে মজবুত জায়গায় কংগ্রেস। রাজনৈতিক বোদ্ধাদের একটা বড় অংশের দাবি, রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো' যাত্রার নির্যাস এই ফল।
২০২৪ সালে বিজেপি-র বিজয়রথ থামানোর জন্য যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্য বিরোধীরা কোমর বাঁধছিলেন, আক্ষরিক অর্থেই ব্যাকফুটে ছিল। যে বিরোধীরা কংগ্রেস থেকে দূরত্ব বজায় রাখছিল, তাদেরই হঠাত্ সুর বদল।
বিজেপি-র শেষের শুরু, বলছেন মমতা
কর্ণাটকের রেজাল্ট বেরনোর পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া ছিল, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে এই হার বিজেপির শেষের শুরু। কর্ণাটকের পরে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগড়েও হারের সম্মুখীন হতে হবে বিজেপিকে। আবার সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, 'যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী, সেখানে ওদের সমর্থন করব। কোনও সমস্যা নেই। তবে ওদেরও অন্য দলকে সমর্থন করা উচিত। আমরা কর্নাটককে সমর্থন করব। অথচ, আপনারা রোজ এখানে (পশ্চিমবঙ্গ) আমাদের সঙ্গে লড়াই করবেন, এটা তো ঠিক নীতি নয়।'
আরও পড়ুন: ২০০ আসনে কংগ্রেসকে সমর্থন TMC-র, কর্ণাটকের ফল দেখেই ২৪'এর রোডম্যাপ তৈরি মমতার
বিরোধী নেতাদের সুর বদল
মহারাষ্ট্রে মহাবিকাশ আঘাডি জোটের শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে), এনসিপি ও কংগ্রেস-- তিন দলই পৃথক সুরে কথা বলছিল। বিশেষ কংগ্রেস ও এনসিপি নেতাদের মধ্যে যে ভাবে একে অপরের নিন্দা চলছিল, তাতে জোট আদৌ টিকবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে।
কিন্তু কর্ণাটকে জয়ের পরে একটি বৈঠকে একজোট থাকার বার্তা মিলেছে। এও ঠিক হয়েছে, মহারাষ্ট্রে জোটের র্যালিতে তিনটি দলের নেতৃত্বই একসঙ্গে থাকবেন। এনসিপি-র শরদ পাওয়ার বলেন, কর্ণাটকের রেজাল্ট থেকে সব বিরোধী নেতারাই একটি বার্তা পেয়েছেন, সব বিরোধীদের রাস্তা দেখাল এই ফল। কর্ণাটকের মতো পরিস্থিতি অন্য রাজ্যগুলিতেও তৈরি করা জরুরি।
নাম না করে বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কও। বিজেডি প্রধানের কথায়, 'সিঙ্গল ইঞ্জিন না ডাবল ইঞ্জিন, সেটা বড় বিষয় নয়। জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে সুশাসনই সরকার চালানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। যে সরকার মানুষের স্বার্থে কাজ করে এবং সুশাসনের দিকে নজর দেয়, সে সরকার সব সময়ই জিতবে।'
২০০ আসনে কংগ্রেস VS বিজেপি
ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসের জোট রয়েছে। বিহারে আরজেডি, জেডিএই ও বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের তালমিল ভাল। ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেস ও আরজেডি জোট। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসিপি জোট। ভারতে ২০০ লোকসভা আসন এমন রয়েছে, যেখানে কংগ্রেস বনাম বিজেপি লড়াই হবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড়ে এ বছরই বিধানসভা ভোট। যদি এই তিন রাজ্যে কংগ্রেস জিতে যায়, তাহলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও ২০০৪ সালের মতো বিরোধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার জায়গায় পৌঁছে যাবে কংগ্রেস।
খবরটি হিন্দিতে পড়তে ক্লিক করুন