সোমবার অযোধ্যায় বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন। ২২ জানুয়ারির আগে ইতিমধ্যেই অযোধ্যা ভূমে নানা রীতি পালন শুরু হয়ে গিয়েছে। রাম মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা পর্ব ঘিরে উত্তরপ্রদেশের এই প্রান্তে সাজ সাজ রব। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাম মন্দিরের উদ্বোধন রাজনীতির অলিন্দে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। অনুষ্ঠানে না যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেশ কয়েক জন বিজেপি বিরোধী নেতা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাম মন্দিরকে সামনে রেখে বিজেপি ফায়দা তুলতে চায় বলে সরব হয়েছেন বিরোধী নেতাদের একাংশ। ধর্মের নামে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। আর সেই কারণেই রাম মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র ফিরিয়েছেন ওই নেতারা।
কংগ্রেস:
রাম মন্দিরের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীকে। কিন্তু তাঁরা কেউই ২২ তারিখ অযোধ্যা যাচ্ছেন না। রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পাননি কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তিনি ওই দিন 'ভারত
ন্যায় জোড়ো যাত্রা'কর্মসূচিতে অসমে থাকবেন। ২২ তারিখ কামাখ্যা মন্দিরে যেতে পারেন রাহুল।
তৃণমূল:
রাম মন্দিরের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২২ তারিখ কলকাতায় সংহতি মিছিলের ডাক দিয়েছেন মমতা। সেদিন কালীঘাট মন্দিরে যাবেন তিনি। হাজরা মোড় থেকে মিছিল যাবে পার্ক সার্কাস ময়দান পর্যন্ত।
আম আদমি পার্টি:
রাম মন্দিরের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আম আদমি পার্টি বা আপের আহ্বায়ক তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানের জন্য ব্যক্তিগত আমন্ত্রণপত্র পাননি বলে জানিয়েছেন কেজরি। তিনিও ২২ জানুয়ারি অযোধ্যা যাচ্ছেন না। তার পরে সেখানে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি):
রাম মন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও। তবে দলের কাজে ব্যস্ত থাকায় এখনও স্পষ্ট নয় যে তিনি আদৌ ২২ তারিখ অযোধ্যা যাবেন কি না। মায়বাতী এ-ও জানিয়েছেন, কোনও কারণে ২২ তারিখ অযোধ্যা যেতে না পারলে, তার পরে যাবেন।
সমাজবাদী পার্টি (এসপি):
রাম মন্দিরের উদ্বোধনে যাওয়ার আমন্ত্রণপত্র প্রত্যাখ্যান করেছেন সপা নেতা অখিলেশ যাদব। ২২ তারিখের পর সেখানে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মুলায়ম-পুত্র।
আরজেডি:
রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্র পেয়েছেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। তবে তিনিও ২২ তারিখ অযোধ্যা যাচ্ছেন না। তবে কেন তিনি যাবেন না, সে নিয়ে কোনও কথা জানাননি।
ন্যাশনাল কনফারেন্স:
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুখ আবদুল্লা রাম মন্দিরের আমন্ত্রণপত্র পাননি বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, আমন্ত্রণপত্র পেলে নিশ্চয়ই ২২ তারিখ অযোধ্যায় যাবেন।
এনসিপি (শরদ শিবির):
প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে থাকবেন না এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারও। তিনি জানিয়েছেন, ২২ তারিখের পর কোনও একদিন রাম মন্দিরে যাবেন।
জেডিইউ:
রাম মন্দিরের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। তবে ২২ তারিখ তিনি অযোধ্যায় যাবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন নীতীশ।
বঞ্চিত বহুজন আঘাড়ি:
রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন ২২ তারিখ অযোধ্যায় যাচ্ছেন না বঞ্চিত বহুজন আঘাড়ি প্রধান প্রকাশ আম্বেদকরও। ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রচার হিসাবে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি-আরএসএস, এই অভিযোগ করে অনুষ্ঠানে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।