'বাংলায় বসেই 'ইন্ডিয়া' জোটের নেতৃত্ব দিতে পারি'। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্যেই আলোড়ন বিরোধী শিবিরে। কংগ্রেস সাফ জানিয়েছে, দেশকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম একমাত্র রাহুল গান্ধী। তাঁর কথায়,'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দারুণ নেত্রী। তবে রাহুল গান্ধী ছাড়া আর কেউ বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই'। মমতার মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিরোধী শিবিরের আরজেডি, সপা এবং শিবসেনা উদ্ধব গোষ্ঠীও।
সাম্প্রতিক নির্বাচন এবং উপনির্বাচনে বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের ফল নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান,'আমিই ইন্ডিয়া জোট তৈরি করে দিয়েছিলাম। আমি এখানে (বাংলায়) বসেও চালিয়ে দিতে পারি'। মমতার এহেন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর দলের সাংসদ বর্ষা গায়কওয়াড় বলেন,'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা ভাবতেই পারেন। তবে আমরা সেটা মনে করি না। ওঁর কথায় তৃণমূল চলে। আমরা কংগ্রেসের নির্দেশ মেনেই চলব'।
বামেদের নিশানায় কংগ্রেস
লোকসভা ভোটের পর বিরোধী উত্থানের হাওয়া মিলিয়ে গিয়েছে হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পরেই। এনিয়ে বাম নেতা ডি রাজা বলেন,'কংগ্রেসকে আত্মবিশ্লেষণ করতে হবে। ইন্ডিয়া জোটের বাকি শরিকদের কথা শুনলেও মহারাষ্ট্র আর হরিয়ানায় এত খারাপ ফল হত না!'
মমতার পাশে সপা ও উদ্ধব গোষ্ঠী
মমতাকে সমর্থন দিয়েছেন অখিলেশ যাদব এবং উদ্ধব ঠাকরের দল। শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠীর সাংসদ সঞ্জয় রাউতের বক্তব্য,'আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য শুনেছি। ওঁর পাশে আছি। আমরা একজোট। ছোটখাট বিষয়ে মতপার্থক্য তো থাকেই। এসব ধরলে চলে না। কলকাতায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলব'।
সপা মুখপাত্র উদয়বীর সিংয়ের কথায়,'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কোনও ইচ্ছাপ্রকাশ করে থাকেন, তা ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের বিবেচনা করা উচিত। এতে জোট আরও মজবুত হবে। বাংলায় বিজেপিকে রুখে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায। ওঁর সঙ্গে আমাদের হৃদয়ের যোগ রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলকে ১০০% সমর্থন করছি। যেখানেই সরকার গঠন করা যায়নি, তা সে হরিয়ানা হোক বা মহারাষ্ট্র, কংগ্রেসই প্রধান দল ছিল। কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না এলে তার দায়ও বর্তাবে তাদের উপরই'।
জোটের কারিগর লালু
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে লালুপ্রসাদের দল দাবি করেছে, বিরোধী জোট তৈরি করেছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীই। আরজেডি মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি বলেন,'বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের আসল কারিগর হলেন লালু প্রসাদ যাদব। তাঁর উদ্যোগেই পটনায় ইন্ডিয়া জোটের প্রথম বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অংশ নিয়েছিলেন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। আমরা ঝাড়খণ্ডে সাফল্য পেয়েছি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৫ সালে বিহারে বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে'।