টিকিটের দাম নিয়ে বচসা। বাসের কন্ডাক্টরকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করল বছর ২০-র এক যুবক। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে প্রয়াগরাজের পুলিশ। অভিযুক্ত একটি ভিডিওতে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে। সেখানে তার দাবি, সে 'নবী মুহম্মদকে অপমান করার' জন্য কন্ডাক্টরকে আক্রমণ করে।
অভিযুক্ত পুলিশের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করলেও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে এনকাউন্টারে ধরা পড়ে।
প্রয়াগরাজ পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত লারেব হাশমির (২০) সঙ্গে বাস কন্ডাক্টর, হরিকেশ বিশ্বকর্মার (২৪) টিকিটের দাম নিয়ে বিবাদ শুরু হয়।
লারেব হাশমিকে কোনও অশিক্ষিত, সাধারণ যুবক ভাবলে কিন্তু ভুল করবেন। সে রীতিমতো একজন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রথম বর্ষের ছাত্র। টিকিটে বিবাদের জেরে সে হরিকেশ বিশ্বকর্মাকে একটি ধারাল অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে। এর ফলে তার ঘাড়ে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে গুরুতর জখম হয়।
লারেব হাশমি এরপর বাস থেকে লাফ দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে লুকিয়ে যায়।
কলেজের ভিতরে হাশমি একটি ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে বলে অভিযোগ। আলোচ্য ভিডিওতে, লারেব হাশমিকে অপরাধ স্বীকার করতে এবং বাসের কন্ডাক্টরকে 'নবী মুহম্মদকে অপমান করার' অভিযোগে অভিযুক্ত করতে দেখা যায় ।
ভিডিওতে তাকে সেই ধারাল অস্ত্রও দেখাতে দেখা গিয়েছে। এটি দিয়েই সে কন্ডাক্টরের উপর আক্রমণ করে।
অভিযুক্তকে ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং যোগী আদিত্যনাথের নামও নিতে শোনা যাচ্ছে।
বাসের ভিতর থেকে তোলা আরও একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এই যুবক ধারাল অস্ত্র হাতে নিয়ে বাইরে দৌড়াচ্ছে।
পরে ঘটনার বর্ণনা করে বাসের চালক মংলা যাদব বলেন, 'হঠাৎ করেই বাসের ভিতরে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আমি একটা শব্দ শুনেই বাস থামিয়ে দিই।'
মংলা যাদব বলেন, তারা বিশ্বকর্মাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান।
এনকাউন্টারে গ্রেফতার
ঘটনার পর প্রয়াগরাজ পুলিশ হাশমিকে কলেজের ভেতর থেকে ধরে ফেলে।
পরে পুলিশের একটি দল তাকে অপরাধে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে নিয়ে গেলে সে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ।
তবে পুলিশের পাল্টা গুলিতে সে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে গ্রেফতার করা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রয়াগরাজের যমুনানগর এলাকার ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (ডিসিপি) অভিনব ত্যাগী বলেন, 'ঘটনার পরে, অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে৷ তদন্ত চলছে৷'
ডিসিপি বলেন, লারেব হাশমি প্রয়াগরাজের ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। প্রয়াগরাজের হাজিগঞ্জ এলাকায় থাকে। তার বাবা মোহাম্মদ ইউনুস একটি পোল্ট্রি ফার্ম চালান।
(প্রয়াগরাজের আনন্দ রাজের ইনপুট সহ)