ফের উত্তপ্ত মণিপুর। গত বছরের ৩ মে শুরু হওয়া হিংসার আগুন এখনও জ্বলছে। গত চার দিনে রাজ্যে 8টি ভিন্ন ভিন্ন হিংসার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এদিকে ১১ নভেম্বর, সশস্ত্র কুকি জঙ্গিরা জিরিবাম জেলার বোরোবেকারা থানা এবং সংলগ্ন সিআরপিএফ ক্যাম্পে গুলি চালায়। বোরোবেকারা থানা থেকে ১০০ মিটার দূরে অবস্থিত জাকুরাডোর করোং মার্কেট ও এর আশেপাশের বেশ কয়েকটি দোকান ও বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। CRPF-এর পাল্টা পদক্ষেপে ১১ জঙ্গি নিহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষে দুই CRPF জওয়ানও আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এই সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হত্যার পর, কুকি-জো কাউন্সিল মঙ্গলবার সকাল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় সম্পূর্ণ বনধের ডাক দিয়েছে। মণিপুর পুলিশ এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে বলেছে, 'আজ, ১১ নভেম্বর, ২০২৪, বিকেল ৩ টের দিকে, সশস্ত্র জঙ্গিরা জিরিবাম জেলার জাকুরাডোর এবং বোরোবেকারা থানার কাছে অবস্থিত একটি সিআরপিএফ পোস্টে হামলা চালায়। নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা জবাবে ১১ জঙ্গি নিহত হয়। জঙ্গিদের সঙ্গে এই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন সিআরপিএফ কনস্টেবল সঞ্জীব কুমার। তাঁকে অসমের শিলচর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার চিকিৎসা চলছে।
সিআরপিএফ ১১ জঙ্গিকে হত্যা করেছে
CRPF এবং পুলিশ আক্রমণে ৪০-৪৫ মিনিটের গুলিবর্ষণের পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। গোলাগুলি বন্ধ হওয়ার পরে, এলাকায় তল্লাশি করা হয় এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ (৩টি একে, ৪ এলএলআর, ২ ইনসাস, ১ আরপিজি, পাম্প অ্যাকশন গান, BP হেলমেট এবং ম্যাগাজিন) সহ সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীদের ১১ টি দেহ উদ্ধার করা হয়। এই হামলার ঘটনায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গি নির্মূলে অভিযান চলছে। অসম রাইফেলস, সিআরপিএফ এবং সিভিল পুলিশের দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
কুকি-জো কাউন্সিল একটি বিবৃতিতে বলেছে, 'জিরিবামের মর্মান্তিক ঘটনায়, সিআরপিএফ-এর হাতে কুকি-জো গ্রামের ১১ জন স্বেচ্ছাসেবককে হারিয়েছি, যাদের নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। .....আমাদের মূল্যবান স্বেচ্ছাসেবকদের হত্যা শুধুমাত্র তাদের পরিবারের জন্য নয়, সমগ্র কুকি-জো সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিধ্বংসী আঘাত। কুকি – যারা শান্তি, ন্যায় ও নিরাপত্তার জন্য এই সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ।..."
জারি কারফিউ
বোরাবেকারা পুলিশ স্টেশন যেখানে জঙ্গিরা আক্রমণ চালায় তার সামনে একটি ত্রাণ শিবির রয়েছে, সেখানে বসবাসকারী পাঁচজন এই ঘটনার পর নিখোঁজ বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। জঙ্গিরা সাধারণ নাগরিকদের অপহরণ করেছে নাকি হামলা শুরু হওয়ার পর তারা আত্মগোপনে চলে গেছে তা স্পষ্ট নয়। তাদের খোঁজ করা হচ্ছে। এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভআরতীয় ন্যায় সংহিতা ১৬৩ ধারার অধীনে সমগ্র এলাকায় কারফিউ বলবৎ থাকবে। বোরোবেকারা মহকুমা জুন মাস থেকে হিংসার একাধিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। এটি এই জেলার অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা।