ভাইরাসের ট্রিপল অ্যাটাক। কেরলে নিপা ভাইরাস, গুজরাতে চাঁদিপুরা এবং মহারাষ্ট্রে জিকা ভাইরাসের তাণ্ডব থামছে না। গুজরাতে চাঁদিপুরা ভাইরাসের কারণে এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেরলে প্রাণ হারিয়েছে এক কিশোর। মহারাষ্ট্রে জিকা ভাইরাসের আক্রান্ত ২৮। তিন রাজ্যে পৃথক পৃথক ভাইরাসের আক্রমণে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের তরফে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জারি হয়েছে সতর্কবার্তাও।
ওই তিন ভাইরাসের প্রভাব কতটা, কীভাবে সংক্রমিত হচ্ছে - এসব খতিয়ে দেখতে তদন্তকারী দল গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই দল গুজরাত, মহারাষ্ট্র ও কেরলে যাবে সরজমিনে তদন্ত করতে। রবিবার, স্বাস্থ্যমন্ত্রক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কেরলে মৃত কিশোরের এনসেফালাইটিস সিন্ড্রোম ছিল। মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ এবং আশপাশের বাসিন্দাদের পরীক্ষার জন্যও নির্দেশ জারি করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। আরও নির্দেশ, যে সব ব্যক্তিরা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের ১২ দিনের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।
আবার গুজরাতে চাঁদিপুর ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এখনও পর্যন্ত, ৭১ জন আক্রান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন ২৭ জন। গুজরাতে ২৩ জেলায় ভাইরাসের সন্দেহজনক কেস পাওয়া গেছে। সেই রাজ্যে ৪১ জন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। ইতিমধ্যে ১ লাখেরও বেশি মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
চাঁদিপুরা ভাইরাসের লক্ষ্মণ: এতে ফ্লুর মতো উপসর্গ দেখা যায়। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হয় অনেকেই। মস্তিষ্কে ফোলাভাব সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জিকা ভাইরাসের ৩৪টি কেস পাওয়া গেছে। পুণেতে আক্রান্ত সবথেকে বেশি। এই ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে প্রতি ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার অন্তর অস্থায়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করেছে। গর্ভবতী মহিলা এবং মায়েরাও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এর প্রভাব ফেলে মায়ের পেটে থাকা ভ্রুণে।
জিকা ভাইরাসের লক্ষণগুলো খুবই সাধারণ। এর মধ্যে রয়েছে শরীরে লাল ফুসকুড়ি, জ্বর, পেশিতে ব্যথা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এডিস মশার কামড়ে জিকা ভাইরাস ছড়ায়। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া ছড়ায়। এই তিনটি ভাইরাস প্রায় একই রকম। এই তিনটি ভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়েছিল পশ্চিম, মধ্য আফ্রিকা এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে।