রোহিত কুমার সিং
মেজাজ হারাচ্ছেন নীতীশ কুমার! অন্তত বিহারের প্রথম দফার নির্বাচনের আগে একাধিক সভায় দেখা গেল তেমনই ছবি। বিভিন্ন সভায় বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন নীতীশ। আর সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হল যে সমস্ত প্রচার সভায় নীতীশ মেজাজ হারিয়েছেন তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিনি আক্রমণ করেছেন লালুপ্রসাদ যাদব ও তাঁর পরিবারকে।
রবিবার মুজফ্ফরপুরে একটি নির্বাচনী প্রচার সভায় যুব সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের মুখে পড়েন নীতীশ। কর্ম সংস্থানের দাবিতে 'নীতীশ ওয়াপস যাও' স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন যুবকরা। এরপরেই নাম না করে তেজস্বীকে বেঁধেন নীতীশ। আরজেডির ইস্তাহারে ১০ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতির বিষয়ে জেডিইউ প্রধানের কটাক্ষ, "কিছু মানুষের না জ্ঞান আছে, না অনুভূতি।" একইভাবে শনিবারও মেজাজ হারান বিহারে মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন বেগুসরাইয়ের তেঘরাতে একটি সভায় নীতীশ বক্তব্য রাখার সময় লালুপ্রসাদের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন কিছু মানুষ। তাতে রীতিমতো বিরক্ত হয়ে নীতীশ বলে ওঠেন, "চারিদিকে দেখে নিন এবং বুঝে নিন, সবার অবস্থা ঠিক করে দেব।" এরপরেই নাম না করে ১৯৯০ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত সময়কালে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে লালুপ্রসাদ যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং ছেলে তেজস্বীকে কটাক্ষ করেন তিনি। তেজস্বীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, "যান নিজের বাবাকে জিজ্ঞাসা করুন, যখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন কোনও স্কুল তৈরি করেছিলেন?" নীতীশের আরও কটাক্ষ, "যখন একজন জেলে গেলেন, তখন স্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী করে দিয়ে গেলেন।" অন্যদিকে গত ২১ তারিখ ছাপড়ার পারসাতেও নির্বাচনী সভায় মেজাজ হারান তিনি। সেখানেও দলীয় প্রার্থীর হয়ে নীতিশ বক্তব্য রাখার সময় লালুপ্রসাদের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন একদল লোক। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে নীতীশ ৩ বার প্রশ্ন করেন, "আপনারা কী বলছেন?" তারপরে তাঁদের সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ঔরঙ্গাবাদের রফিগঞ্জেও নির্বাচনী প্রচার সভায় বক্তব্য রাখার সময় বিক্ষোভের মুখোমুখি হন নীতীশ। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে সভা থেকে সরিয়ে নিয়ে যান পুলিশ কর্মী ও দলীয় সদস্যরা। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি পত্রটি পুলিশকে দিয়ে চেয়ে পাঠান তিনি।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে নীতীশ কুমারকে রাজনৈতিক মহল ধৈর্য্যশীল ও ঠাণ্ডামাথার রাজনীতিক হিসেবেই চেনে, তাঁর হঠাৎ এই ধরনের আচরণগত পরিবর্তন কেন? তবে কি নীতীশের এই সহজেই মেজাজ হারান অন্য কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে? প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে।