বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি ভাষণ দিতে উঠে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরিকে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অধীর চৌধুরীকে প্রথমে অনাস্থা বিতর্কে বলতে দেওয়া হয়নি কেন? সেই প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'এই অনাস্থা প্রস্তাবে কিছু অদ্ভুত জিনিস দেখা গেছে। বক্তার তালিকায় বিরোধী দলের সবচেয়ে বড় নেতার নাম ছিল না। ১৯৯৯ সালে বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আসে। সেই সময় নেতৃত্বে ছিলেন শরদ পাওয়ার। বিতর্ক শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে অটলজি-র সরকার ছিল। তখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন সনিয়া গান্ধী। তিনি অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ২০১৮ সালে খাড়গে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন, তিনি প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু এবার কী হল অধীর বাবুর? । তাঁকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। অমিত ভাই (শাহ) জিজ্ঞাসা করলে তবেই তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়। তবে গুড়ের গোবর কীভাবে তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে তিনি পারদর্শী।'
বিরোধী জোটকে কটাক্ষ করে এরপরই প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কংগ্রেস বারবার ওঁকে অপমান করে। অধীরবাবুকে কেন ঠিক মতো কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না? বোধ হয় কলকাতা থেকে কোনও বিশেষ ফোন এসেছিল। তার জন্যই কি তাঁকে (অধীর) এই বিতর্কে সরিয়ে রাখা হল? আমি অধীরবাবুর প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।'
ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দেশের মানুষ বারবার আমাদের সরকারের প্রতি তাদের আস্থা প্রকাশ করেছে। এজন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ। ঈশ্বর অত্যন্ত দয়ালু এবং তিনি কোনও না কোনও উপায়ে তাঁর ইচ্ছা পূরণ করেন। আমি এটাকে ঈশ্বরের আশীর্বাদ বলে মনে করি যে ঈশ্বর বিরোধীদের পরামর্শ দিয়েছেন এবং তারা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন। আমি ২০১৮ সালে অনাস্থা প্রস্তাবের সময় বলেছিলাম যে এটি আমাদের জন্য ফ্লোর টেস্ট নয়, এটি তাদের জন্য একটি ফ্লোর টেস্ট এবং ফলস্বরূপ তারা নির্বাচনে হেরেছে। একভাবে বিরোধীদের অবিশ্বাস আমাদের জন্য ভাল। আজ আমি দেখছি যে আপনারা (বিরোধীরা) সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে জনগণের আশীর্বাদে ২০২৪ সালের নির্বাচনে এনডিএ এবং বিজেপি আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে একটি দুর্দান্ত জয় নিয়ে ফিরে আসবে।'
দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ করে মোদী বলেন, 'কিছু বিরোধী দলের আচরণ প্রমাণ করেছে তাদের কাছে দেশের চেয়ে দল বড়। তোমার মনে গরিবের ক্ষুধা নেই, ক্ষমতার ক্ষুধা তোমার মনে। তোমরা নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত, দেশের তরুণদের ভবিষ্যত নিয়ে নয়। বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সঠিকভাবে আলোচনা করেনি। যে ফিল্ডিংটি বিরোধীরা করেছিল, এখান থেকে (সরকারের দিক থেকে) চার এবং ছক্কা মারা হয়েছিল। অনাস্থা প্রস্তাবে বিরোধীরা নো-বল-নো-বল করছে। সরকার সেঞ্চুরি করছে। আমি বিরোধীদের বলতে চাই কিছু পরিশ্রম করে আসতে। আপনাদের ২০১৮ সালে বলা হয়েছিল যে কঠোর পরিশ্রম করে আসবেন, কিন্তু পাঁচ বছরেও কিছুই বদলায়নি। বিরোধীরা দেশকে হতাশা ছাড়া কিছুই দেয়নি। যাদের নিজেদের অ্যাকাউন্ট নষ্ট হয়ে গেছে, তারা আমাদের কাছে হিসাব চাইছে।'