Advertisement

বিধানসভা প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন, সংসদে মিমি-নুসরত-দেবদের কী খবর?

সংসদে চলছে বাদল অধিবেশন। তৃণমূল সাংসদদের এখন অধিকাংশেরই ঠিকানা রাজধানী। ডেরেক, সুদীপ, কল্যাণরা নিয়মিত সংসদে নিশানা করে চলেছেন মোদী সরকারকে। প্রায় অধিবেশনের প্রতিদিনই সংসদ চত্বরে চলছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। আর এর মাঝেই ২০২৪ লক্ষ্যে বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজে রাজধানীতে হাজির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দিল্লিতে যখন নিজেদের কর্মকাণ্ড বাড়াচ্ছে তৃণমূল, তখন সেখানে সেভাবে দেখা মিলছে না গ্ল্যামার বাহিনীর। যাদবপুরের সাংসদ মিমিকে তাও দেখা গিয়েছ সুখেন্দু শেখর রায়ের বাড়িতে, কিন্তু অধিবেশনের প্রথম থেকেই মিসিং তাঁর 'বনুয়া' নুসরত।

সংসদে কোথায় গেল তৃণমূলের  গ্ল্যামার বাহিনী? সংসদে কোথায় গেল তৃণমূলের গ্ল্যামার বাহিনী?
সুমনা সরকার
  • কলকাতা,
  • 26 Jul 2021,
  • अपडेटेड 7:21 PM IST
  • সংসদে কেন্দ্রের বিরোধিতায় ঝড় তুলছেন তৃণমূল সাংসদরা
  • বাদল অধিবেশনের মধ্যেই এবার হাজির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও
  • কিন্তু সংসদে কোথায় গেল তৃণমূলের গ্ল্যামার বাহিনী?

সংসদে চলছে বাদল অধিবেশন। তৃণমূল সাংসদদের এখন অধিকাংশেরই ঠিকানা রাজধানী। ডেরেক, সুদীপ, কল্যাণরা নিয়মিত সংসদে নিশানা করে চলেছেন মোদী সরকারকে। প্রায় অধিবেশনের প্রতিদিনই সংসদ চত্বরে চলছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। এরমধ্যে অধিবেশনের  প্রথম দিন ১৯ জুলাই জ্বালানি ও রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সাইকেলে করে সংসদে হাজির হয়ে চমকে দিয়েছিলেন  সুখেন্দু,  কল্যাণরা। আর এর মাঝেই ২০২৪ লক্ষ্যে বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজে রাজধানীতে হাজির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শোনা যাচ্ছে ২৮ জুলাই বঙ্গভবনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করতে পারেন বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে। সম্প্রতি  সর্বভারতীয় তৃণমূলের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন মনোনীত হয়েছেন মমতা। রাজধানীতে গিয়ে ঢুঁ মারার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর পুরনো কর্মস্থল সংসদে। তবে দিল্লিতে যখন নিজেদের কর্মকাণ্ড বাড়াচ্ছে তৃণমূল, তখন সেখানে সেভাবে দেখা মিলছে না গ্ল্যামার বাহিনীর। যাদবপুরের সাংসদ মিমিকে তাও দেখা গিয়েছ সুখেন্দু শেখর রায়ের বাড়িতে, কিন্তু অধিবেশনের প্রথম থেকেই মিসিং তাঁর 'বনুয়া' নুসরত। 

আরও পড়ুন: পাখির চোখ ত্রিপুরা! আগামী মাসে কোন প্ল্যান নিয়ে বিপ্লব গড়ে অভিষেক ?

একুশের ভোটে  তরুণ প্রজন্মের মন জয়ে করতে তৃণমূল কংগ্রেস ময়দানে নামিয়েছিল তাদের তিন তারকা সাংসদ মিমি, নুসরত ও দেবকে। গ্রীষ্মের দাবদাহ উপেক্ষা করেই রাজ্যের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল তারকা সাংসদদের। এছাড়াও অতীতে বহুবার মোদী-শাহদের সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে মিমি-নুসরতদের। একুশের নির্বাচনে তারা নিজেরা প্রার্থী ছিলেন না বটে, কিন্তু দলকে জেতাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন সর্ব শক্তি দিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করেই রাজনীতি থেকে যেন উবে গিয়েছেন গ্ল্যামার দুনিয়ার এই প্রতিনিধিরা।

আরও পড়ুন: নিশীথকে নিয়ে তোলপাড়, রাজ্য থেকে ৪ মন্ত্রীর তিন জনই কিন্তু পূর্ববঙ্গীয়

সংসদের অধিবেশন যখন শুরু হয়েছে তখন মলদ্বীপে ছুটি কাটাচ্ছিলেন দেব। ফিরে এসেই নিজের নতুন ছবি 'কিশমিশ' নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন অভিনেতা। মহরতও ইতিমধ্যে হয়ে গেছে, অগাস্টে শুরু হবে শ্যুটিং। এর মাঝে ঘাটালের সাংসদ কতদিন সংসদে উপস্থিত হতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। রাজনীতিতে বরাবরই ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত দেব। কোনও বিরোধী নেতাকে কখনও আক্রমণ করতে দেখা যায়নি তাঁকে। রাজনীতিতে বরাবরই সৌজন্য বজায় রেখেছেন ঘাটালের সাংসদ।

Advertisement

আরও পড়ুন

 

 

২০১৯ সালে হঠাৎ করেই রাজনীতির আঙ্গিনায় পা রাখেন টলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। জীবনের প্রথম নির্বাচনে জিতে সাংসদ হয়ে উৎসাহের কোনও কমতি ছিল না মিমির। সাংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা থেকে বাংলায় শপথ বাক্য পাঠ শেষে বন্দে মাতরম, জয় হিন্দ এবং জয় বাংলা বলা সবেতেই নজর কেড়েছিলেন মিমি।  শপথ নেওয়ার পরেই রীতি মেনে মিমি পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা জানান বর্ষীয়ান স্পিকার ওম বিড়লাকেও। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিকবার মোদী সরকারের বিরোধিতা করতে দেখা গেছে যাদবপুরের সাংসদকে। বিধানসভা ভোটের প্রচারেও ঝড় তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার সংসদের অধিবেশনে তেমন ভাবে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে। তবে ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান শেষে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি উড়ে যান অভিষেক। বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের সেলিব্রেশন উপলক্ষে সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছিল খাওয়া-দাওয়ার। সেখানে পিকে, অভিষেকদের সঙ্গে অবশ্য হাজির হয়েছিলেন মিমিও। তাঁকে দিল্লিতে ফটোশ্যুট করে ইনস্টাগ্রামে সেই ছবি দিতেও দেখা গেছে। তবে ঝাঁঝাল রাজনীতি যেন কোথায় উধাও হয়ে গেছে মিমির থেকে।

 

 

 

তবে দেব-মিমির থেকেও গত দু'বছরে রাজনীতির আঙ্গিনায় সবচেয়ে সক্রিয় দেখা গিয়েছিল নুসরত জাহানকে। সেই নুসরত এখনও খবরের শিরোনামে থাকলেও রাজনীতি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য নেই বসিরহাটের সাংসদের। প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই রেকর্ড গড়েছিলেন অভিনেত্রী নুসরত জাহান। বসিরহাট কেন্দ্রে তৃণমূলের  তারকা প্রার্থী পেয়েছিলেন ৭ লাখ ৮২ হাজার ৭৮টি ভোট। নিকটবর্তী বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসুর প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় যা প্রায় ২৫ শতাংশই বেশি ছিল। নুসরত এবং সায়ন্তনের ভোটের ব্যবধান ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে এত বড় ব্যবধান নিয়ে আর কোনও তৃণমূল প্রার্থীই জেতেননি। তারপর বহুবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা গিয়েছে নুসরত জাহানকে। একাধিকবার দলনেত্রীর প্রশংসাও পেয়েছেন নুসরত। তবে নুসরতের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা শুরু হতেই কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছেন সাংসদ। বর্তমানে ৭ মাসের গর্ভবতী নুসরত। অনাগত অতিথির বাবা কে তা নিয়ে নুসরত চুপ থাকলেও তাঁর সন্তান ভূমিষ্ঠ হতে চলেছে সেপ্টেম্বরেই। গত কয়েকমাস ধরে মিডিয়াকে এড়িয়ে চললেও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে নিয়ে নিত্যনতুন ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে খবরে রয়েছেন সাংসদ-অভিনেত্রী। রাজনীতির ঝাঁঝাল শব্দের পরিবর্তে তাঁর  ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে কেবল ফুটে উঠছে প্রেমের বার্তা।

 

 

এবারে বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকে সংসদে গরহাজির রয়েছেন নুসরত। বিসরহাট থেকে সাংসদ হয়েই ডেস্টিনেশন ম্যারেজ করতে তুরস্কে গিয়েছিলেন নুসরত। সেখান থেকে ফিরে এসে সংসদে শপথবাক্য পাঠ করেন তিনি। তার সেই শপথ নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক তুঙ্গে। গত জুনে নুসরত দাবি করেছেন, নিখিল জৈনের সঙ্গে তাঁর বিয়েই হয়নি। তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন মাত্র। এদিকে সংসদের ওয়েবসাইটে তাঁর পরিচয় ছিল, তিনি বিবাহিত। পুরনো ভিডিওতে দেখা গেছে সংসদে শপথ নেওয়ার সময় তিনি "আমি নুসরত জাহান রুহি জৈন" বলেই পরিচয় দিয়েছেন। এই নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে নুসরতের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে গেরুয়া শিবির।সংসদে দাঁড়িয়ে বিয়ে নিয়ে মিথ্যে বলেন নুসরত জাহান, প্রশ্ন তুলছে বিজেপি। নুসরতের ব্য়ক্তিগত জীবন নিয়ে ঝড় উঠলেও এসবের মাঝে কোনও বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি ঘাসফুল শিবিরকে। এবার বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সংসদে চাপ বাড়ানোর খেলায় মেতেছে তৃণমূল। সেখানে রাজ্য থেকে দলের ২২ জন সাংসদের মধ্যে নুসরতের দেখা না মিললেও বিষয়টি নিয়ে একেবারে চুপ রয়েছে ঘাসফুল শিবিরও। এদিকে নুসরতের সঙ্গে 'বোনুয়া' মিমির সম্পর্কে ভাঙন ধরেছে বলেই শোনা যাচ্ছে টলিপাড়ায়। মিমি-কে যতবার নুসরতের প্রেগন্যান্সি ও বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি তা এড়িয়ে গিয়েছেন। অন্যদিকে বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়ানো তনুশ্রী ও শ্রাবন্তীর সঙ্গে বারবার সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে নুসরতকে। সব মিলিয়ে যা নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। 

Advertisement


 

Read more!
Advertisement
Advertisement