আগামী মাসে হতে চলা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতি। দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির। একাধিক নাম নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জল্পনা। সংখ্যাতত্ত্বের খেলায় নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার চেষ্টা করছে দলগুলি। বুধবার দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির বৈঠকে যোগ দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনাও হয়।
বিরোধীদের বৈঠকে কী হল?
বৈঠকের সময় যে নামগুলি উঠে এসেছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার, মহাত্মা গান্ধীর নাতি গোপালকৃষ্ণ গান্ধী, এন কে প্রেমচন্দ্রন এবং এনসি প্রধান ফারুক আবদুল্লাহ। প্রথমে আলোচনা হয় শরদ পাওয়ারের নাম নিয়ে। মমতা নিজেই তাঁর নাম তুলে ধরেন। অধিকাংশ দল সর্বসম্মতিক্রমে তাতে সমর্থন জানিয়ে যৌথ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পক্ষে মত দেয়। যদিও শারদ পাওয়ার নিজেই সেই দৌড় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। আপাতত তাঁকে সক্রিয় রাজনীতিতেই থাকতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। শরদ পাওয়ার রাজি না হওয়ার পর মহাত্মা গান্ধীর নাতি গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম উত্থাপন করেন মমতা।
এদিকে বাম দলগুলো আগে থেকেই গোপালকৃষ্ণ গান্ধীকে সমর্থন করে আসছে। শরদ পাওয়ারের সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরির বৈঠকে তাঁর নাম নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠকে আরও একটি নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেটি হল জম্মুকাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এনসি প্রধান ফারুক আবদুল্লাহ। এবার যেহেতু ফারুকের পরিবর্তে তাঁর ছেলে ওমর আবদুল্লা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন, তাই তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর নাম নিয়ে কোনও আলোচনা করা উচিত নয়। তাই তাঁর নাম নিয়েও এখনও ঐক্যমতে পৌঁছানো যায়নি।
বৈঠকের পর সংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলগুলি যৌথ প্রার্থী দেবে বলে জানানো হয়। এমন ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, যিনি গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে পারবেন। কিন্তু কাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়েই রয়ে গেছে প্রশ্ন। যদিও এখনও নাম ঘোষণা করা হয়নি, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। তাঁর দৃষ্টিতে এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০২৪ সালের যুদ্ধের সূচনা। এমতাবস্থায় বিরোধীদের ঐক্যমত খুবই জরুরি।
আপাতত এক সপ্তাহের মধ্যে আবারও বৈঠকে বসতে চলেছেন বিরোধীরা। ঐক্যমতে আসার চেষ্টা করা হবে। মনে করা হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার এবং মল্লিকার্জুন খার্গে বিরোধী দলের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
নাড্ডা-রাজনাথের কী রণনীতি?
এদিকে বিজেপিও ঐক্যমত্যের চেষ্টায় রয়েছে। বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই বিষয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন। দুজনই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। তাঁদের প্রার্থী যাতে সব দলের সমর্থন পায় তা নিশ্চিত করার চেষ্টাও করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই অখিলেশ যাদব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও হয়েছে। যদিও কোনও জায়গা থেকেই সমর্থনের আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থীর নাম নিয়ে আলোচনা করেছেন পশুপতি পারস, কর্নাড সাংমা, সুদেশ মেহতা, ফারুক আবদুল্লাহ, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী এবং নির্দল সাংসদ নবনীত কৌর রানা ও সুমনলতা অম্বরীশের সঙ্গে। এখন দেখার কোন পক্ষ আগে প্রার্থী ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন - লাঞ্চ ও ডিনারের পর করুন এই এক্সাসাইজগুলি, হাতেনাতে পাবেন ফল