Ratan Tata: রতন টাটা বুধবার মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান এমেরিটাস রতন টাটা ব্যবসার জগতেই তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য পরিচিত ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি সমাজসেবার ক্ষেত্রেও অসামান্য ছিলেন। দেশ তথা বিশ্বের যুবসমাজের কাছে তিনি অনুপ্রেরণাস্বরূপ।
রতন টাটার জীবনের ১০টি অবাক করা তথ্য(Ratan Tata Facts):
রতন নাভাল টাটা ছিলেন টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামসেদজি টাটার প্রপৌত্র। ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে জন্মান। বাবা নাভাল টাটা ও মা সুনি টাটা।
১৯৪৮ সালে তাঁর বাবা-মা আলাদা থাকতে শুরু করেন। সেই সময় থেকে দিদিমা নবজবাই টাটার কাছেই মানুষ হন তিনি।
রতন টাটা অল্প বয়সে ৪ বার বিয়ের প্রায় কাছাকাছি এসে গিয়েছিলেন। কিন্তু কখনও বিয়ে করেননি। একবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেছিলেন যে, তার জীবনে একবার প্রেম এসেছিল। লস অ্যাঞ্জেলেসে কাজ করার সময় তিনি প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধের কারণে সেই তরুণীর পরিবার তাঁকে ভারতে আসতে দেননি। আর সেই কারণেই তাঁদের সম্পর্ক পূর্ণতা পায়নি।
রতন টাটা ক্লাস এইট পর্যন্ত মুম্বইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। এরপর, তিনি মুম্বইয়ের ক্যাথিড্রাল এবং জন কনন স্কুল, সিমলার বিশপ কটন স্কুল এবং নিউ ইয়র্ক সিটির রিভারডেল কান্ট্রি স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৫ সালে হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন। এরপর, কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৫৯ সালে আর্কিটেকচারে স্নাতক হন।
রতন টাটা তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৬১ সালে। তখন তিনি টাটা স্টিলের কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়ার দেখভাল করতেন। ফ্যাক্টরিতে দাঁড়িয়ে হাতেকলমে কাজের এই অভিজ্ঞতা তাঁকে ভবিষ্যতে টাটা গ্রুপের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি করে দেয়
১৯৯১ সালে তিনি টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান হন। আর তারপর থেকেই টাটা গ্রুপকে আধুনিক, মুক্ত অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঢেলে সাজাতে শুরু করেন। পুরনো ব্যবসার পাশাপাশি আধুনিক, প্রযুক্তিগত ব্যবসার জগতে প্রবেশ করেন। টাটা মোটর্সকেও তিনি মধ্যবিত্তের গাড়ি হিসাবে দেশে জনপ্রিয় করে তোলেন।
একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত পাইলট। নিজেই নিজের বিমান ওড়াতেন। ২০০৭ সালে, বেঙ্গালুরু এয়ার শো-তে তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে এফ-16 ফ্যালকন বিমান ওড়ান।
টাটা টি-র টেটলি অধিগ্রহণ, টাটা মোটর্স-এর জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার অধিগ্রহণ এবং টাটা স্টিল-এর কোরাস অধিগ্রহণের পিছনে তাঁর মস্তিষ্ক ছিল।
২০০৯ সালে রতন টাটা সাধারণ মানুষের গাড়ি- ন্যানো বাজারে আনেন। মাত্র ১ লক্ষ টাকা দাম ছিল সেই গাড়ির। চাইলে যে কম দামেও চার চাকা গাড়ি তৈরি করা সম্ভব, সেটাই প্রমাণ করে দেন তিনি।
২০১২ সালে তিনি টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি টাটা সন্স, টাটা ইন্ডাস্ট্রিজ, টাটা মোটর্স, টাটা স্টিল এবং টাটা কেমিক্যালস-এর চেয়ারম্যান এমেরিটাস হিসাবে ছিলেন।
রতন টাটার দূরদর্শীতা ও সমাজসেবা দেশ তথা বিশ্বের ব্যবসায়ী মহলের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তাঁর প্রয়াণে দেশের শিল্পমহলে নিঃসন্দেহে এক বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি হল।