ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি বলতে সেইসব ঋণগ্রহীতাকে বোঝায় যারা ঋণ শোধের ক্ষমতা আছে। তা সত্ত্বেও ব্যাঙ্ক বা অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অনেকে টাকা ফেরত দেন না। এমন ব্যক্তিদের ব্যাঙ্কিংয়ের ভাষায় 'উইলফুল ডিফল্টার'(Willful Defaulter) বা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি বলা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এঁরা ঋণ পরিশোধ না করে অন্য কোথাও এই টাকা ব্যবহার করেন। তবে RBI-এর নয়া প্রস্তাবে এমন ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের উল্লেখ করা হয়েছে। RBI-এর নতুন খসড়ায় বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি করলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২৫ লক্ষ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে।
NPA হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে 'অ্যাকশন'
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই ধরনের ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তিদের নতুন করে লোন নেওয়ার আগে প্রথমে তাঁদের পুরনো NPA-এর খাতা ক্লিয়ার করতে হবে। RBI-এর প্রস্তাব, কোনও অ্যাকাউন্ট এনপিএ হওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই তার নামে উইলফুল ডিফল্টারের তকমা লাগাতে হবে। এর আগে, কাউকে উইলফুল ডিফল্টার বলার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না।
ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করার কারণ
একবার এই ট্যাগ পড়ে গেলে, সেই ঋণগ্রহীতাদের কার্যত বারোটা বেজে যাবে। আরবিআই-এর প্রস্তাব অনুসারে, এমন ব্যক্তিরা আর কোনও ব্যাঙ্ক বা আর্থিক সংস্থা থেকে ফের কোনও ঋণ নিতে পারবেন না। ঋণ রিকনস্ট্রাক্ট করারও সুবিধা পাবেন না। RBI-এর খসড়ায় বলা হয়েছে, NBFC-গুলিও একই নিয়ম অনুসরণ করে উইলফুল ডিফল্টারের ট্যাগ দিতে পারবে।
তবে যুক্তি দেওয়ারও সুযোগ দেওয়া হবে
প্রস্তাব অনুযায়ী, ব্যাঙ্কগুলিকে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করতে হবে। ঋণগ্রহীতা কেন কিস্তির টাকা মেটাচ্ছেন না, তার লিখিত যুক্তি দিতে হবে। নোটিশ পাঠিয়ে তারপর ১৫ দিন সময় দেবে ব্যাঙ্ক। প্রয়োজনে ঋণগ্রহীতাকে আলাদা শুনানির সুযোগও দেওয়া হবে।
৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রস্তাব পর্যালোচনা
RBI-এর সার্কুলারে বলা হয়েছে, এই নির্দেশগুলির মূল উদ্দেশ্য হল, যাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপি করছেন, তাঁদের আরও ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বন্ধ করা। আরবিআই ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এই খসড়া নিয়মে পরামর্শ গ্রহণ ও রদবদল করতে পারে।