তৃতীয় বারের জন্য সরকার গড়লেও এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ফল আশানুরূপ হয়নি। তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই সমালোচনায় সরব হয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস। হিন্দি বলয়ের অন্যতম রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও বিজেপির ফল ভাল হয়নি। এই আবহে প্রথম বার আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে চলেছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের।
জানা গিয়েছে, গোরক্ষপুরে যোগী-ভাগবতের সাক্ষাৎ হতে চলেছে। লোকসভা নির্বাচনের ফল এবং সে রাজ্যে আরএসএসের সংগঠন বাড়ানো নিয়ে দু'জনের মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সঙ্ঘের বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির চলছে ৩ জুন থেকে। প্রায় ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই শিবিরে যোগ দিয়েছেন। গতকাল চিউতাহা এলাকায় এসভিএম পাবলিক স্কুলে প্রশিক্ষণ শিবিরে ভাষণ দিয়েছেন আরএসএস প্রধান।
অন্য দিকে, লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে সম্প্রতি আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমারের এক মন্তব্য আলোচিত হয়েছে। বিজেপিকে 'অহঙ্কারী' এবং বিরোধী জোট ইন্ডিয়াকে 'রাম বিরোধী' বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এই মন্তব্য ঘিরেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনে মোদী বাহিনীর '৪০০ পারের' স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। শরিকদের উপর নির্ভর করে সরকার গড়তে হয়েছে বিজেপিকে। এই প্রেক্ষপটে ফল নিয়ে বিজেপিকে কার্যত চাঁচাছোলা ভাষায় নিশানা করেছে আরএসএস। সঙ্ঘের মুখপত্রে বলা হয়েছে যে, ভোটের ফল একটা 'রিয়েলিটি চেক'। বিজেপির নেতত্বের সমালোচনা করে বলা হয়েছে যে, ভোটের ফল অতিরিক্ত উৎসাহী বিজেপির নেতা-কর্মীদের কাছে রিয়েলিটি চেক। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিজেপির নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এতটাই বিভোর ছিলেন যে, সাধারণ মানুষের কথা তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। আরএসএসের মুখপত্রে এ-ও বলা হয়েছে, ভোটের ফলে এটাও স্পষ্ট হয়েছে যে, যেসব দক্ষ কর্মীরা অক্লান্ত ভাবে কাজ করেছেন, তাঁদেরকেই উপেক্ষা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এবার লোকসভা ভোটে ৪০০টিরও বেশি আসন পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা। কিন্তু এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯৩টি আসন। বিজেপি একক ভাবে পেয়েছে ২৪০টি আসন। অর্থাৎ, বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিরোধী জোট ইন্ডিয়া পেয়েছে ২৩৪টি আসন। শেষে শরিকদলের উপর নির্ভর করে তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে হয়েছে মোদীকে।