পাকিস্তান থেকে বড় খবর। নিহত আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন আমির সরফরাজ। লাহোরে 'অজ্ঞাত আততায়ীদের' গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর। আমির সরফরাজ সেই ব্যক্তি যিনি ISI-এর নির্দেশে পাকিস্তানের জেলে থাকা ভারতীয় নাগরিক সর্বজিৎ সিং -কে খুন করেছিলেন। আমির সরফরাজ পাকিস্তানের কোট লাখপত জেলে সর্বজিৎকে পলিথিন দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ISI-এর নির্দেশে আমির সর্বজিতের উপর নির্যাতনও করেন। পঞ্জাবের সর্বজিৎ পাকিস্তানে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।
সর্বজিৎ সিং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত ভিখিবিন্দ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। কৃষিকাজ করতেন। ১৯৯০ সালের ৩০ অগাস্ট অজান্তে পাকিস্তান সীমান্তে পৌঁছে যান। সেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জওয়ানরা তাঁকে গ্রেফতার করে। লাহোর ও ফয়সালাবাদে বোমা বিস্ফোরণে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। সেই বোমা হামলায় ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে সর্বজিৎ সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
ভারতে আফজাল গুরুর মৃত্যুর কয়েকদিন পর আমির সরফরাজ সহ বন্দীরা আক্রমণ করে সর্বজিৎ সিং-কে। ২৩ বছর ধরে লাহোরের কোট লাখপাট জেলে রাখা হয় তাঁকে। লাহোরের ওই জেলে একদল দুষ্কৃতী সর্বজিতের উপর হামলা করে। ইট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে জিন্নাহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
সন্ত্রাসবাদী তথা ভারত সরকারের গুপ্তচরের তকমা দিয়ে সর্বজিৎকে জেলবন্দি করা হয়েছিল। সর্বজিতের মুক্তির জন্য লড়াই করেছিল ভারত সরকার। একাধিক বার সর্বজিতের প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। যদিও ২০০৮-এ সর্বজিতের প্রাণদণ্ড অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি রাখে পাক সরকার। এরপর ২০১৩-তে লাহোরের কোট লাখপত জেলে তাঁর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় অন্য কয়েদিরা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান সর্বজিৎ।
২০১৬ সালে সর্বজিৎ-কে নিয়ে সিনেমাও হয়। ছবিতে সর্বজিতের চরিত্রে অভিনয় করেন রণদীপ হুডা। দলবীর কৌর অর্থাৎ সব্রজিতের দিদির ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকে।