লোকসভা নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়ে গিয়েছে। নবনির্বাচিত লোকসভা সদস্যদের শপথ গ্রহণ এবং স্পিকার নির্বাচনের পরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন। সংসদ শুরু হতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনীতি। বিষয় সেঙ্গোল। সংসদ ভবনে স্পিকারের আসনের কাছে রাখা সেঙ্গোল অপসারণের দাবি জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। সেঙ্গোলকে রাজতন্ত্রের প্রতীক বলে অভিহিত করেছে সমাজবাদী পার্টি। সেঙ্গোলের জায়গায় একটি সংবিধানের প্রতিলিপি রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।
সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ আর কে চৌধুরীর কথায়,'সংবিধান সর্বোপরি। তা গণতন্ত্রের প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার সংসদে 'সেঙ্গোল' প্রতিষ্ঠা করেছে। 'সেঙ্গোল'-এর অর্থ রাজদণ্ড। রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। রাজদণ্ড দিয়ে দেশ চলবে নাকি সংবিধান দিয়ে? সংবিধান বাঁচাতে সেঙ্গোলকে সংসদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি'।
কী বললেন অখিলেশ যাদব?
আর কে চৌধুরীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো এবং সাংসদ অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন,"আমার মনে হয় আমাদের সাংসদরা সম্ভবত এ কথা বলছেন কারণ সেঙ্গোলের সামনে মাথানত করে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। হয়তো শপথ নেওয়ার সময় তিনি সেটা ভুলে গিয়েছেন। তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য সেঙ্গোলের কথা বলে থাকতে পারেন'। সপা নেতার মন্তব্যে শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) নেতা সঞ্জয় রাউত জানান,'সংবিধান সর্বোপরি। ইন্ডিয়া মঞ্চের বৈঠকে এনিয়ে আলোচনা করব'।
সপার পাশে কংগ্রেস
সেঙ্গোল ইস্যুতে সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করেছে কংগ্রেস। তাদের দাবি,সেঙ্গোলকে নিয়ে সপার দাবি ভুল নয়। কংগ্রেস সাংসদ রেণুকা চৌধুরীর কথায়, 'বিজেপি নিজের ইচ্ছায় সেঙ্গোল রেখেছে। এসপির দাবি ভুল নয়। সংসদে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা উচিত। কিন্তু বিজেপি স্বেচ্ছাচারিতায় বিশ্বাসী'।
সেঙ্গোল নিয়ে আরজেডি নেত্রী মিসা ভারতীর মন্তব্য,'সেঙ্গোলকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। এটি গণতন্ত্রে চলে না। রাজতন্ত্রের প্রতীক সেঙ্গোল। সেঙ্গোলকে জাদুঘরে রাখুন'।
পাল্টা বিজেপির
বিরোধীদের পাল্টা দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর কথায়,'বিরোধীদের আর কোনও কাজ নেই। তারা সংবিধান নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এরা সংবিধানে বিশ্বাস করে না। মোদিজি সংবিধানকে সম্মান করেন'।
আর বিজেপি সাংসদ মহেশ জেঠমালানির কথায়,'সেঙ্গোল জাতির ঐতিহ্যের প্রতীক'। সেঙ্গোল এখন কেউ সরাতে পারবে না বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত চৌধুরী। তাঁর মতে, সস্তার প্রচারের জন্য এসব কথা বলছে বিরোধীরা। আমরা সবাই সংবিধানে বিশ্বাস করি। সমাজবাদী পার্টি একা সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে রাখেনি'।