Shootout In Train: জয়পুর থেকে মুম্বাইগামী একটি চলন্ত ট্রেনে সোমবার ভোরে রীতিমতো আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়। চলন্ত ট্রেনে এক আরপিএফ কনস্টেবলের গুলি চালনার ঘটনা চারজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। সোমবার সকালে জয়পুর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনে একজন কনস্টেবল গুলি চালিয়ে একজন এএসআই সহ মোট চার জনকে হত্যা করেছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার একটি ভিডিওটিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে অভিযুক্ত কনস্টেবলকে পাকিস্তানের নাম নিতে শোনা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ৩১ জুলাই সোমবার ভোর ৫টা থেকে সোয়া ৫টার মধ্যে ট্রেন নম্বর ১২৯৫৬ জয়পুর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস তার গন্তব্যের দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি ভাপি এবং বোরিভালি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে চলছিল। এই ট্রেনে ৩০ বছরের আরপিএফ কনস্টেবল চেতন সিংকে ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের এএসআই/টিকারাম মীনাও এই ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কনস্টেবল চেতন সিং B5 কোচে থাকা এএসআইকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপর একই কোচের আরেক যাত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এর পরে চেতন প্যান্ট্রি কারের দিকে চলে যায় এবং এখানে যাওয়ার পথে এক যাত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপর অভিযুক্ত কনস্টেবল ওই ট্রেনের প্যান্ট্রি কারের পাশের বগি S6-এ গিয়ে তৃতীয় যাত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ওই গুলিবর্ষণের ঘটনায় রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের এএসআই/টিকারাম মীনাসহ ৩ জন রেলযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আরপিএফ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গুলি চালানোর কারণ কী ছিল?
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, কী কারণে ওই আরপিএফ কনস্টেবল গুলি চালালেন তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আরপিএফ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পশ্চিম রেলওয়ে পুলিশ কমিশনার বলেছেন যে, আরপিএফ কনস্টেবল চেতন কোনও কারণে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এই ঘটনার পর মিরা রোড রেলস্টেশনের কাছে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। যাত্রীরা কোনও মতে ট্রেনের চেন টেনে দেন। ট্রেন থামতেই এর পর রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের জওয়ান চেতন সিং ট্রেন থেকে রেললাইনের নিচে অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। মিরা রোড রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত পুলিশ (জিআরপি) এবং রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ) অবিলম্বে তাকে ধরে ফেলে এবং অস্ত্রসহ অভিযুক্ত আরপিএফ কনস্টেবলকে হেফাজতে নেয়। এই ঘটনায় বোরিভালি রেলওয়ে থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
নিহতদের পরিচয়
ওই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৩ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন এএসআই/টিকারম মীনা (আরএসবি স্টাফ), বয়স ৫৮ বছর, আজগর আব্বাস শেখ, বয়স ৪৮ বছর, বাড়ি মধুবনী বিহার এবং আব্দুল কাদেরভাই মহম্মদ হুসেন মানপুরওয়ালা, বয়স ৬২ বছর, নালাসোপাড়া, পালঘর। চতুর্থ ব্যক্তির পরিচয় এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। তবে তার বয়স ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। ময়নাতদন্ত শেষে শেষকৃত্যের জন্য লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অভিযুক্ত রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের জওয়ান চেতন সিংকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।