গোটা দেশজুড়ে নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল ইন্টেনশিভ রিভিশন বা SIR প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা সংশোধন চলছে। বিহারে এই প্রক্রিয়া অন্তিম পর্যায়ে। তার পরেই পশ্চিমবঙ্গের ভোট। তাই মনে করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গেও শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে SIR। এহেন পরিস্থিতিতে বিহারের SIR-এ আধার কার্ড নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্ন করল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কমিশনকে জিগ্গেস করল, ভোটার তালিকা সংশোধনে কেন আধার ও ভোটার আইডি কার্ডকে কেন মানছেন না কমিশন।
আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডে অনীহা নিয়ে প্রশ্ন
বস্তুত, বিহারে চলতি ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়ায় আধার ও ভোটার কার্ড (EPIC) মানতে নির্বাচন কমিশনের অনীহা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, 'পৃথিবীর যে কোনও নথিই জাল হতে পারে।' যখন ভোটার রেজিস্ট্রেশনের ফর্মে ইতিমধ্যেই আধার চাওয়া হচ্ছে, তখন যাচাইয়ের নথি হিসেবে আধার ও EPIC কেন পুরোপুরি গ্রহণ করা হচ্ছে না, তা কমিশনকে ব্যাখ্যা করতে হবে। বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, যাচাই প্রক্রিয়ায় আধার ও ভোটার কার্ড, উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
কী কী নথি লাগছে বিহারে SIR? মোট ১১টি নথিকে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিস্তারিত রইল।
১। সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পরিচয়পত্র
২। ১ জুলাই ১৯৮৭-র আগে জারি হওয়া কোনও সরকারি নথি
৩। বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া জন্ম সার্টিফিকেট
৪। পাসপোর্ট
৫। যে কোনও বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (সাল, তারিখ উল্লেখ থাকতে হবে)
৬। স্থায়ী বাসিন্দা সার্টিফিকেট (জেলাশাসক বা সমতুল কারও দেওয়া)
৭। বনপালের সার্টিফিকেট
৮। কাস্ট সার্টিফিকেট
৯। এনআরসি অন্তর্ভুক্তির প্রমাণ (যেখানে প্রযোজ্য)
১০। পারিবারিক রেজিস্টার (রাজ্য সরকার বা প্রশাসন প্রদত্ত)
১১। সরকার প্রদত্ত জমি বা বাড়ির নথি (দলিল বা পড়চা)
পশ্চিমবঙ্গে ২০০২ সালে শেষবার বিশেষ নিবিড় সংশোধন
২০০৩ সালে বিহারে শেষবার SIR হয়েছিল। ফলে যাঁদের নাম ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত ভোটার তালিকায় ছিল, তাদের আর নতুন করে কোনও নথি জমা দিতে হবে না। ২০০৩ সালের পর থেকে যাঁদের নাম ভোটার তালিকায় উঠছে শুধু তাঁদের প্রয়োজনীয় নথি দিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে ২০০২ সালে শেষবার বিশেষ নিবিড় সংশোধন হয়েছিল। সেক্ষেত্রে বাংলায় যদি SIR হয়, তাহলে ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে প্রামাণ্য ধরা হতে পারে।