দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবেদনের শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্ট ইডিকে বলেছে যে নির্বাচনের কারণে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিন নিয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে মঙ্গলবার অর্থাৎ ৭ মে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এই মামলায় সময় লাগতে পারে, তবে নির্বাচনের কারণে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বিবেচনা করতে পারি।
বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র পক্ষে উপস্থিত অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজুকে বলেন যে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে তার আবেদনের শুনানির জন্য সময় লাগতে পারে এবং তাই আদালত তাকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করবে। এই বিষয়ে এসভি রাজু বলেছেন যে তিনি কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার বিরোধিতা করবেন।
এ বিষয়ে বেঞ্চ বলেন, আমরা বলছি যে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের শুনানি করব, আমরা বলছি না যে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেব। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিতে পারি বা নাও দিতে পারি। সর্বোচ্চ আদালত রাজুকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদনে ৭ মে যুক্তিতর্কের জন্য প্রস্তুত হতে বলেছে। প্রসঙ্গত যে বেঞ্চ কেজরিওয়ালের আবেদনের শুনানি করছে, সেখানে ইডি দ্বারা কেজরির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ২১ মার্চ গ্রেফতারের পর থেকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন। ১৫ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্ট ইডিকে নোটিশ দিয়েছিল এবং কেজরিওয়ালের আবেদনের জবাব চেয়েছিল। এর আগে ৯ এপ্রিল, দিল্লি হাইকোর্ট সিএম কেজরিওয়ালের গ্রেফতার বহাল রেখেছিল এবং বলেছিল যে ইডির কাছে খুব কম বিকল্প ছিল, কারণ ইডি বারবার সমন জারি করার পরেও কেজরিওয়াল তদন্তে যোগ দিতে অস্বীকার করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলা ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কেজরিওয়াল ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েটও এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন। কয়েকজন ছাড়াও পেয়েছেন। তবে এখনও জেলেই রয়েছেন এই আপ নেতা। এবার তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি হবে। প্রথম থেকেই কেজরিওয়াল বলে আসছেন তাঁকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের বাইরে রাখতে চাইছে বিজেপি । তাই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে। আশঙ্কা সত্যি করে গ্রেফতাঁর করা হয়। তবে তিনি এবং তাঁর দল জানিয়ে দেয় মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কেজরিই। পদ ছাড়বেন না । তারপর থেকে সেভাবেই চলছে। অন্যদিকে, কেজরির গ্রেফতারি থেকে নির্বাচনী ফয়দা তোলার চেষ্টা করছে আপ-সহ ইন্ডিয়া শিবির। মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারির অব্যবহিত পরেই দিল্লিতে বড় সভা করে বিরোধিরা। সেখানেই প্রথম প্রচারে আসেন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনীতা কেজরিওয়াল । এরপর থেকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে দলীয় সহকর্মীদের নিয়ে প্রচারের কাজ করেছেন তিনি । এবার কেজরিওয়ালের জামিনের আবেদন শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।
পরবর্তী শুনানি ৭ মে সকাল ১০.৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে
আগামী ৭ মে মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী জামিনে কেজরিওয়ালের মুক্তির বিষয়ে শুনানি করবে আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আমরা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানি করব। আদালত বলেছেন, এ বিষয়টি দীর্ঘ সময় ধরে চলবে। তাই, সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারের জন্য আমরা কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি দেওয়ার কথা বিবেচনা করব। তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া উচিত কি না তা নিয়ে আলোচনা করব। এছাড়াও বলেছেন যে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজুকে তার মক্কেলের জন্য জামিনের শর্তে ইডি থেকে নির্দেশ আনতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট ইডিকে জিজ্ঞাসা করে কেজরিওয়াল এখনও ফাইলে সই করতে পারবেন কি না? এ বিষয়ে ইডিকে জবাব দিতে হবে।