বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী তসলিমা নাসরিন ভারতে তাঁর বসবাসের সরকারি অনুমতি পুনর্নবীকরণের ইতিবাচক অগ্রগতির খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। মঙ্গলবার তসলিমা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি বার্তায় অমিত শাহের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। যা তাঁর আবাসিক পারমিট পুনর্নবীকরণের বিষয়ে স্বস্তি প্রকাশের ইঙ্গিত দেয়।
তসলিমা লিখেছেন, 'এক পৃথিবী ধন্যবাদ', এবং সঙ্গে হাত জোড় করা ইমোজি যুক্ত করেন। এর আগে সোমবার তসলিমা একটি জরুরি মেসেজে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সরাসরি অনুরোধ করেন তাঁর বসবাসের অনুমতি বাড়ানোর জন্য। নাসরিন ভারতে ২০ বছর ধরে নির্বাসিত অবস্থায় রয়েছেন এবং এই দেশটিকে তাঁর 'দ্বিতীয় বাড়ি' বলে অভিহিত করেছেন।
তসলিমা ওই পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, 'প্রিয় অমিত শাহজি নমস্কার। আমি ভারতে থাকি কারণ আমি এই মহান দেশটিকে ভালোবাসি। গত ২০ বছর ধরে এটি আমার দ্বিতীয় বাড়ি। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২২ জুলাই থেকে আমার বসবাসের অনুমতির মেয়াদ বাড়াচ্ছে না।' তিনি আরও যোগ করেন, 'আমি খুব চিন্তিত। আপনি যদি আমাকে থাকতে দেন তবে আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ হব। উষ্ণ শুভেচ্ছা।'
উল্লেখ্য, তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন, ১৯৯৩ সালে তাঁর বিরুদ্ধে জারি করা ফতোয়ার পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আসেন। তাঁর বই 'লজ্জা' বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার বিষয়ে আলোকপাত করার কারণে তাঁকে চরম বিপদের মুখোমুখি হতে হয়। সেই সময়ে তাঁর ওপর ফতোয়া জারি করা হয় এবং তাঁকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। এরপর থেকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসবাস করছেন, কলকাতা ও দিল্লির মতো শহরে স্থানান্তরিত হন।
তিনি সুইডিশ নাগরিক হলেও ভারত তাঁকে দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের অনুমতি দিয়েছে। তবে সম্প্রতি তাঁর পারমিটের পুনর্নবীকরণে দেরি হওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিলেন নাসরিন। তিনি এ নিয়ে সরকারি যোগাযোগের অভাব সম্পর্কেও কথা বলেন এবং সেপ্টেম্বরে 'বাংলা ডট আজতক ডট ইনে'র একটি সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁর আবাসিক পারমিটের অনলাইন স্ট্যাটাসে 'আপডেট' দেখানো হয়েছিল, যা তাঁকে গভীর উদ্বেগে ফেলে।