অতুল সুভাষ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া, তাঁর মা নিশা এবং ভাই অনুরাগকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গুরুগ্রাম থেকে নিকিতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মা ও ভাইকে পাকড়াও করা হয়েছে প্রয়াগরাজে। অতিসম্প্রতি বেঙ্গালুরুর সফ্টওয়্যার অতুল সুভাষের আত্মহত্যার ঘটনা আলোড়ন ফেলে গোটা দেশে। স্ত্রী নিকিতার বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন অতুল।
শুক্রবার নিকিতা সিঙ্ঘানিয়ার জৌনপুরের বাড়িতে নোটিশ দেয় বেঙ্গালুরু পুলিশ। নোটিশে ৩ দিনের মধ্যে বয়ান রেকর্ড করতে বলা হয়। এলাহাবাদ হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন করেন নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া, নিশা সিঙ্ঘানিয়া এবং অনুরাগ সিঙ্ঘানিয়া। অতুল একটি ২৩ পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেন। সেই সঙ্গে দেড় ঘণ্টার একটি ভিডিও নেট মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল,বিয়ের শুরু থেকে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ। একের পর এক মামলা দেওয়া হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। খোরপোশের নামে কোটি কোটি টাকা দাবি করেছেন স্ত্রী।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে পৌঁছয় বেঙ্গালুরু পুলিশ। স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া, শাশুড়ি নিশা সিঙ্ঘানিয়া, শ্যালক এবং অন্যরা থাকেন। তবে পুলিশ সেখানে পৌঁছে নিকিতার বাড়িতে তালাবন্ধ দেখতে পায়। কারণ, নিকিতার মা নিশা ও তাঁর ভাই অনুরাগ একদিন আগে ঘর তালা দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বাড়িতে নোটিশ সেঁটে এসেছিল পুলিশ। নোটিশে লেখা ছিল, বেঙ্গালুরুর আত্মহত্যার মামলায় বয়ান রেকর্ড করা হবে।
অতুল সুভাষের বিরুদ্ধে জৌনপুর আদালতে মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করেছিলেন স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া। পরে বিবাহবিচ্ছেদ, হত্যা, মারধর এবং অপ্রাকৃতিক যৌনতার মামলা প্রত্যাহার করেন। জৌনপুর আদালতে অতুল সুভাষের বিরুদ্ধে চলছে তিনটি মামলা।
বিহারের বাসিন্দা অতুল সুভাষ বেঙ্গালুরুর মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা কোম্পানিতে ডিজিএম হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালে নিকিতা সিঙ্ঘানিয়াকে বিয়ে করেছিলেন।
২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে অতুলের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিকিতা। অভিযোগপত্রে নিকিতা উল্লেখ করেছিলেন যে, অতুল তাঁর সঙ্গে 'জন্তুর মতো' আচরণ করতেন। তাঁকে মারধরও করতেন বলে অতুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। অভিযোগপত্রে অতুল, অতুলের বাবা এবং দেওরকে অভিযুক্ত করেছলেন। পণের আইনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে নিকিতা উল্লেখ করেছেন, অতুল এবং তাঁর পরিবার ১০ লক্ষ টাকা পণ দাবি করেছিলেন। পণের জন্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার চালানো হত হলেও অভিযোগ করেছেন নিকিতা। অতুলের পরিবারের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই নাকি ২০১৯ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিকিতার বাবার মৃত্যু হয়। যদিও সুইসাইড নোটে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অতুল। তিনি লিখেছেন যে, নিকিতার বাবার মৃত্যু হয়েছিল স্ট্রোকের কারণে। ১০ লক্ষ পণের দাবিও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তিনি।