উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচে দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রায় হিংসার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন রামগোপাল মিশ্র। তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। গুলি করার আগে রামগোপালের উপর যথেচ্ছে নির্যাতন চালানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে এই তথ্য সামনে এসেছে। মৃতের দেহে ৩৫ টি ক্ষত চিহ্ন মিলেছে।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে উল্লেখ, বৈদ্যুতিক শক এবং রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয় রামগোপালের। শরীরে ৩৫ ক্ষত চিহ্ন মিলেছে। ছুরি দিয়ে শরীরে একের পর এক আঘাত করা হয়। মাথায়, কপালে ও হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলার চিহ্নও মিলেছে। সূত্রের খবর, রাম গোপালের পায়ের নখ উপড়ে ফেলা হয়। শরীরে এতগুলো ক্ষত করার পর তাঁকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়।
অভিযোগ, বাহরাইচ জেলার মহসি তহসিলের মহারাজগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের সময় দুষ্কৃতীরা রাম গোপাল মিশ্রকে অপহরণ করে খুন করে এক গোষ্ঠীর লোক। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠায়। চিকিৎসকরা বলছেন, বৈদ্যুতিক শক এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রাম গোপালের ব্রেন হেমারেজ হয়। তারপর তিনি মারা যান।
পুলিশ সূত্রে খবর, রামগোপাল মিশ্র রবিবার সন্ধে ৬টা নাগাদ দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যোগ দেন। মহারাজগঞ্জ বাজারে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকালয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার হিংসার সূত্রপাত। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক দল দুষ্কৃতী ছাদ থেকে পাথর ছুড়তে থাকে। তাতে হিংসার আগুনে ঘি পড়ে।
ঠিক তখন রামগোপালকে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। মৃত্যুর খবরে মহারাজগঞ্জে তোলপাড় শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। সোমবার মৃতদেহ গ্রামে পৌঁছলে জনতা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে থাকে। মহারাজগঞ্জ এলাকায় অনেক বাড়িঘর, নার্সিংহোম, বাইকের শোরুম ও দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। গোটা জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। PAC, RAF রাস্তায় নামানো হয়। STF প্রধান নিজেই পিস্তল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও মহসির মহারাজগঞ্জে এখনও উত্তেজনা রয়েছে।