ক্রমশই ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্করতর হচ্ছে জোশীমঠের অবস্থা। এরইমাঝে বৃষ্টির পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁদের বাড়ির দেওয়ালে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে পুরনো ফাটলগুলি আরও চওড়া হয়ে উঠেছে। জোশীমঠের ২৫ থেকে ২৮টি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে। একইসঙ্গে উদ্ধারকার্যে জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান সেনাপ্রধান। পাশাপাশি, এসডিআরএফ কমান্ড্যান্ট নীলকান্ত মিশ্র জানান, এখনও পর্যন্ত মোট ১৩১টি পরিবারকে নিরাপদস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি শহরে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ভূগর্ভস্থ উন্নয়নমূলক কাজগুলি করার আগে সেই সংক্রান্ত ঝুঁকিগুলি বিবেচনা করা হয় না। এক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণগুলি ভেঙে ফেলার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই ভূমিধ্বসের ফলে বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জোশীমঠ, বদ্রীনাথ এবং হেমকুন্ড সাহেবের মতো বিখ্যাত তীর্থস্থান তথা পর্যটনস্থলগুলি।
পুজো দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী
এই ঘটনার মাঝে বৃহস্পতিবার জোশীমঠের নরসিংহ মন্দিরে পুজো দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরে থাকা বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। জোশিমঠ সঙ্কট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সহায়তা ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
জোশীমঠের ধস কবলিত এলাকার পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সহায়তাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ধামী। তিনি বলেন, "আমরা জোশীমঠের জনগণের পাশে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তাঁদের (আক্রান্ত ব্যক্তিদের) বিষয়ে যত্ন নেওয়া হবে"। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ১.৫ লক্ষ টাকার অন্তর্বর্তী সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনের বিশদ ব্যবস্থা তৈরি করা হচ্ছে। তবে গোটা উত্তরাখণ্ড বিপদের মধ্যে রয়েছে, এমনটা নয় বলেই স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
হায়দরাবাদের বিজ্ঞানীরা জোশিমঠের ভূমিধস নিয়ে গবেষণা করবেন
এদিকে সিএসআইআর-ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট (NGRI) এর বিশেষজ্ঞদের একটি দল ইতিমধ্যেই জোশীমঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করবে বলে জানা এক বড়িষ্ঠ বিজ্ঞানী। এনজিআরআই-এর সিনিয়র প্রধান বিজ্ঞানী আনন্দ কে পান্ডের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি দল শুক্রবারই ঘটনাস্থলে পৌঁছবেবলে মনে করা হচ্ছে। পরের দিন থেকেই কাজ শুরু করবে দলটি।
এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানী আনন্দ কে পান্ডে পিটিআই-কে বলেন, "আমাদের সরঞ্জাম পথে রয়েছে। ১৩ জানুয়ারি, পুরো দলটি সাইটে পৌঁছে যাবে। এলাকাটি জরিপ করতে ১৪ তারিখ থেকে আমরা কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সেখানে থাকবো।"
আরও পড়ুন - লালকেল্লার লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো থেকে বাদ গান্ধী-নেহরুর একাধিক প্রসঙ্গ