উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গেই আটকে জীবন। শ্রমিকদের প্রতিটি দিনই যেন এক-একটি বছর। তবে সুড়ঙ্গের এই অন্ধকারের মাঝেও মিলছে আশার আলো। তাঁরা নিশ্চিতভাবেই বেরিয়ে আসবেন, বলছেন উদ্ধারকারীরা। তবে অপেক্ষার প্রহর যেন বেড়েই চলেছে। শনিবার, ব্লেড নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মার্কিন মুলুক থেকে উদ্ধারকার্যের জন্য আনা অগার মেশিন খারাপ হয়ে যায়। আর তারপরেই শ্রমিক ও উদ্ধারকারী দল আবারও হতাশার মুখে পড়ে। তবে বর্তমানে মনে করা হচ্ছে, উদ্ধারকারী দলের কাছে ভার্টিকাল (উল্লম্ব) ড্রিলিংয়ের বিকল্প অপশন রয়েছে। অর্থাৎ টানেলের ঠিক উপরে, পাহাড়ের অংশটি খনন করা যেতে পারে। ভার্টিকাল ড্রিলিংয়ের জন্য ভারী মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে।
অগার মেশিন ব্যর্থ
শ্রমিকদের জীবন বাঁচাতে টানেলের উপর থেকে খননের প্রস্তুতি চলছে। ভার্টিকাল ড্রিলিংয়ের জন্য টানেলের উপরের অংশে মেশিন বসানো হচ্ছে। এর আগে এটাই মনে করা হয়েছিল যে অগার মেশিন দিয়েই দ্রুত ধ্বংসাবশেষে খনন কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং শ্রমিকদের বের করে আনা হবে। কিন্তু শনিবার ভোরে হঠাতই এমন খবর এল যাতে হতাশ গোটা দেশ। অগার মেশিন সেই মাটি পাথরের ধস ভেদ করতে ব্যর্থ হয়। ব্লেড ভেঙ্গে যন্ত্রটি কার্যত প্রাণহীন হয়ে পড়ে।
কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে?
কিছু শিলায় খনন কাজ করা বেশ সহজ। নিজে থেকেই উপরের ভার ধরে রাখে। আবার কিছু শিলায় তা একেবারেই হয় না। উত্তরকাশীতে টানেল নির্মাণের সময় সেখানকার পাথরগুলি সেই ওজন নিতে পারেনি। ভূতাত্ত্বিক জরিপে অভাব, অনুপযুক্ত নকশা এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণকে এর জন্য সম্ভাব্য দায়ী বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে আপদকালীন পথ না রাখাটাও ঠিক হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লম্ব ড্রিলিং-ই প্ল্যান বি এর অংশ ছিল
আসলে, উল্লম্ব ড্রিলিং বরাবরই প্ল্যান বি-এর অংশ ছিল। ফলে আপাতত পুরোদমে এর আলোচনা চলছে। এই পরিকল্পনার আওতায় টানেলে ৮৬ মিটার উল্লম্ব খনন করা হবে। তবে এখনও পর্যন্ত উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলো এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে এই পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যাওয়া হবে। একই সঙ্গে টানেলের অপর প্রান্ত থেকেও চলছে অনুভূমিক খনন কাজ। অপর প্রান্ত থেকে খননের জন্য এখনও পর্যন্ত ৩টি বিস্ফোরণ করানো হয়েছে।
এর আগে অগার মেশিন দিয়ে ড্রিলিংয়ের কাজ চলছিল। ড্রিলিং মেশিনের মাধ্যমে ৪০ সেন্টিমিটার পুরু পাইপ পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু প্রায় ৪৫ থেকে ৪৬ মিটার দূরত্বে অগার মেশিনটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। মেশিনটি ভেঙে যায়। শ্রমিকদের থেকে মাত্র ১২ থেকে ১৫ মিটার দূরত্বে কাজ হয়ে যায়। এই পরিকল্পনার আওতায় শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সিল্কিয়ার পাশে মেডিকেল ফেসিলিটিও তৈরি ছিল। ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স এবং ৪০ জন চিকিৎসকের একটি দল টানেলের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল।