কৃষকের জমি নিয়েছিল রেল, তবে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল নামমাত্র। কিন্তু ছাড়ার পাত্র নন পাঞ্জাবের লুধিয়ানার কৃষক সমপুরাণ সিং। রেলকে বুঝে নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়ে কোর্টে গিয়ে একটি ট্রেনের মালিক হয়ে গেলেন তিনি। কি ভাবছেন কোনও গল্প বলছি? একে বারেই নয়। এটি কোনও গল্প নয় একেবারে সত্যি ঘটনা। তবে আজ থেকে 14 বছরের আগের আদালতের এই রায়ে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন সকলেই। তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি আদালত সেই রায় এমন কিছু দিতে পারে তাঁকে। আপনার আমার মতো মানুষ এই বিষয়টি কল্পনা করতে পারবেন না এটাই তো স্বাভাবিক। জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ আদালতের নির্দেশে স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস পেয়ে যান লুধিয়ানার সমপুরাণ সিং। এবার আশি আসল ঘটনায়, 2007 সালে লুধিয়ানা চণ্ডীগড় রেলের লাইন বসানোর জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। এক একর জমির জন্য প্রথমে 25 লক্ষ টাকা ও পরে 50 লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু জমির জন্য সমপুরাণ সিং রেলের কাছে এক কোটি 47 লক্ষ টাকা দাবি করেন। যদিও নর্দান রেলওয়ে তাঁকে মাত্র 42 লক্ষ টাকা দিয়েছিল। কিন্তু এই টাকা কোনও ভাবেই নিতে রাজি হননি তিনি। সঙ্গে সঙ্গে রেলের বিরুদ্ধে আদালতে চলে যান। আদালতও কৃষকের পক্ষেই রায় দিয়ে 2015 সালের জানুয়ারি মাসে কৃষককে বকেয়া ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ওই রেলের গড়িমসির জন্য সেই টাকা আর পাননি তিনি। কিন্তু কোনও ভাবেই রেলকে ছাড়তে নারাজ সে। ফের আদালতে আবেদন জানান সমপুরাণ। কৃষকের সমস্ত কথা শুনে বিচারক নির্দেশ দেন, ‘যে মুহূর্তে লুধিয়ানা স্টেশনে পৌঁছবে স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনটি তখনই দিয়ে দিতে হবে কৃষককে’। তবে এখানেই শেষ নয়, বিচারক নির্দেশ দেন স্টেশন মাস্টারের ঘর দিয়েও দিয়ে দিতে হবে ঐ কৃষককে। আদালতের নির্দেশে রেলও বোকা বনে যায়। কিন্তু কী আর করা যাবে আদালতের নির্দেশ যে মানতেই হবে। অগত্যা, স্টেশনে ট্রেন পৌঁছতেই আদালতের নির্দেশ ট্রেন কৃষকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারপরেই সুপারদারি নিয়ে ট্রেনটি সমপুরাণের হাত থেকে নিয়ে নেন সেকশন ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ কুমার। মাত্র কিছুক্ষণের জন্য ট্রেনের মালিক হয়ে যান লুধিয়ানারা কৃষক। ভাবুন একবার, আদালত চাইলেই সব কিছুই করতে পারে।