শুরু হয়ে গেছে বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ দুর্গা পুজোর কাউন্টডাউন। দেবী দুর্গা, মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন, এই জন্যেই বিশ্বাস করা হয় যে, এই উৎসব খারাপ শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির বিজয় হয়। আশ্বিন মাসে প্রায় দশ দিন ধরে দুর্গাপুজোর উৎসব পালিত হয়। যদিও প্রকৃত অর্থে, উৎসব শুরু হয় ষষ্ঠীর দিন থেকে।
নবরাত্রি
মা দুর্গার উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত একটি উত্সব হল নবরাত্রি। হিন্দুধর্মে সবচেয়ে পবিত্র এবং শক্তিশালী বলে বিবেচিত হয়। শারদীয়া নবরাত্রি অধর্মের ওপর ধর্মের বিজয়ের প্রতীক। পশ্চিমবঙ্গের দুর্গোৎসব ও অন্যান্য রাজ্যের নবরাত্রির উদ্দেশ্য একই, দেবী দুর্গার আরাধনা। নবরাত্রির ৯ দিনে দুর্গার নয়টি রূপের পুজো করা হয়। এই নবরাত্রিতে মা ত্রিপুরা ভৈরবী, মা ধূমাবতী, মা বগলামুখী, মা কালী, মা তারা দেবী, মা ত্রিপুরা সুন্দরী, মা ভুবনেশ্বরী, মা ছিন্নমস্তা, মা মাতঙ্গী ও কমলা দেবীর পুজো করা হয়।
নবরাত্রি ২০২৩ কবে পড়েছে?
১৫ অক্টোবর, রবিবার থেকে ২৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার
২০২৩ সালের দুর্গাপুজোর দিনক্ষণ
২০২৩ সালে মহালয়া পড়েছে ১৪ অক্টোবর, শনিবার। মহাপঞ্চমী - ১৯ অক্টোবর, মহাষষ্ঠী - ২০ অক্টোবর, মহাসপ্তমী - ২১ অক্টোবর, মহাঅষ্টমী - ২২ অক্টোবর, মহানবমী - ২৩ অক্টোবর এবং মহাদশমী - ২৪ অক্টোবর।
নবরাত্রিতে মা দুর্গার আগমনের আগে বাড়ি পরিষ্কার করতে হয়। কথিত আছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ছাড়া বাড়িতে দেবীর আরাধনা করলে শুভ ফল পাওয়া যায় না। তাই প্রতিপদ তিথিতে কলশ স্থাপনের আগে পুরো বাড়ি পরিষ্কার করে নিতে হবে। নবরাত্রির আগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ জিনিসও ঘর থেকে বের করা উচিত। বাড়িতে এই জিনিসগুলি রাখা খুব অশুভ বলে মনে করা হয়। সেই সঙ্গে আরও কিছু নিয়ম মেনে চললে তবেই শুভ ফল মেলে।
রসুন-পেঁয়াজ
বিশ্বাস অনুযায়ী, নবরাত্রিতে, দেবী তার ভক্তদের বাড়িতে নয় দিন বিরাজ করেন। তাই এই সময়কালে বাড়ি পরিশুদ্ধ রাখা খুবই জরুরি। সেই সঙ্গে নবরাত্রির সময় পেঁয়াজ, রসুন, ডিম, মাংস, মাছ বা অ্যালকোহল ইত্যাদি ঘরে না রাখাই ভাল।
ছেঁড়া বা অব্যবহৃত জুতো ও জামাকাপড়
পুরনো বা ছেঁড়া অব্যবহৃত জুতো বা জামাকাপড় বাড়ি থেকে বের করে দিন। এছাড়া ঘর থেকে ভাঙা কাঁচ বা বাসনপত্র সরিয়ে ফেলুন। বাড়ির কোনও অংশে আবর্জনা বা বর্জ্য পদার্থ রাখা উচিত নয়। এই ধরনের জিনিস বাড়িতে নেতিবাচক শক্তির সৃষ্টি করে।
বন্ধ ঘড়ি
যদি আপনার বাড়িতে কোথাও বন্ধ বা অকেজো ঘড়ি পড়ে থাকে, তাহলে তা ঘর থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিন। ঘরে বন্ধ ঘড়ি রাখা খুবই অশুভ বলে মনে করা হয়। এটি শুধু উন্নতিতে বাধা দেয় তা না, সেই সঙ্গে খারাপ সময়ও ডেকে আনে।
ভাঙা মূর্তি
বাড়িতে দেব-দেবীর কোনও ভাঙা মূর্তি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে ফেলুন। এমন ছবিও ঘরে রাখবেন না। আশেপাশের কোনও নদী বা পুকুরে ফেলে দিন। বাড়িতে থাকা ভাঙা মূর্তি দুর্ভাগ্যের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
খারাপ আচার বা খাবার
যদি আপনার বাড়ির রান্নাঘরে খারাপ আচার বা কোনও খাবার থাকে, তাহলে পরিষ্কার করার সময় সেগুলো বের করে নিন। ঘরের খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মা দুর্গা বিরক্ত হন।