বছরের ১২টি অমাবস্যার মধ্যে কৌশিকী অমাবস্যার (Kaushiki Amavasya) বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। তন্ত্র মতে ও শাস্ত্র মতে ভাদ্র মাসের এই তিথিটি একটু বিশেষ। অনেক কঠিন ও গুপ্ত সাধনা এই দিনে করলে আশাতীত ফল মেলে। সাধক কুলকুণ্ডলিনী চক্রকে জয় করেন।
বৌদ্ধ ও হিন্দু তন্ত্রে এই দিনের এক বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। তন্ত্র মতে এই রাতকে 'তারা রাত্রি'ও বলা হয়। এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরক দুইয়ের দরজা মুহূর্তের জন্য খোলে এবং সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করেন ও সিদ্ধি লাভ করেন।
এই তন্ত্র সাধনা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বহু পৌরাণিক কাহিনি উঠে আসে তারাপীঠের বুক থেকে। শোনা যায়, কৌশিকী রূপে মা তারা এই দিনের বিশেষ সন্ধিক্ষণে শুম্ভ নিশুম্ভ নামক অসুরকে দমন করেন। সেই নাম থেকেই এই দিনের তিথি কৌশিকী অমাবস্যা নামে খ্যাত।
কৌশিকী অমাবস্যায় ভুলেও আমিষ ভোজন করতে বারণ করা হয়। শাস্ত্র মতে, এই দিনে আমিষ ভোজন করলে শরীরে নেগেটিভ এনার্জি বেড়ে যায়। এ দিন আমিষ ভোজন করলে চর্মরোগ এবং পেট-পাকস্থলী সম্পর্কিত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, এমনটাই শাস্ত্রে বর্ণিত রয়েছে।
কৌশিকী অমাবস্যার রাতে কোথাও একা ভ্রমণ করা ঠিক নয়। পুরাণ অনুযায়ী, এ দিন রাতে বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ এবং নরকের দ্বার খুলে যায়। যার ফলে প্রচুর নেগেটিভ এনার্জি উৎপন্ন হয়, যেটা জীবনে এবং শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদের এদিন বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়। কারণ এই নেগেটিভ এনার্জির প্রভাব গর্ভস্থ সন্তানের উপর পড়তে পারে।
শাস্ত্র মতে বলা হয়, এই দিনে তন্ত্রসাধনার ফলে নেগেটিভ এনার্জি তৈরি হয় অনেক সময়। যার কু-প্রভাব পড়তে পারে।
যদি একান্তই কোথাও ভ্রমণ করতে হয়, তবে সঙ্গে তুলসি পাতা বা গাছের ডাল সঙ্গে রাখুন। অমাবস্যা লাগার আগে এই পাতা বা ডাল তুলে নিতে হবে। কারণ অমাবস্যায় তুলসি পাতা তোলা নিষেধ।
এ দিন দেবী কৌশিকী বা কালী মায়ের উদ্দেশে রক্ত জবা এবং সিঁদুর দান করুন। এতে জীবনের বাধা বিপত্তি দূর হয়।
অমাবস্যার রাতে যদি সদর দরজার কাছে একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হয়, তাহলে গৃহস্থের সংসারে তার সুপ্রভাব পড়ে।