Ganesh Chaturthi 2021: থিম এবং সাবেকিয়ানা। কলকাতার গণেশপুজো দেখা যাচ্ছে দুই ছবিই। সব মিলিয়ে জমজমাট কলকাতার গণপতির আরাধনার আয়োজন। করোনা-বিধি মেনেই সে পিজোর আয়োজন করা হয়েছে।
কলকাতায় গত কয়েক বছরে গণেশ পুজো বেড়েছে। এখন মহাধূমধাম করে পুজোর আয়োজন করা হয়। যা কয়েক বছর আগে ভাবাই যেত না। গণেশ পুজো বারোয়ারি পুজোর চেহারা নিয়েছে বললে ভুল বলা হবে না।
খুঁটি পুজো দিয়ে শুরু
কলকাতায় বড়সড় করে দুর্গাপুজো হয়। তাক লেগে যায় সে-সব দেখে। তাকে ঘিরে কত আয়োজন। থিম থেকে আলো, মণ্ডপে ঢোকার লাইন থেকে বিশেষ পাস- আয়োজনের অভাব নেই। তেমন না হলেও অনেকটাই সেই পথেই হাঁটছেন কলকাতার গণেশ পুজো আয়োজকেরা। যেমন খুঁটি পুজোর আয়োজন। কলকাতার বিভিন্ন এলাকার পুজোর আয়োজকরা ব্যবস্থা করেছিলেন খুঁটি পুজোর। কলকাতা এবং সংলগ্ন বিভিন্ন অংশ পুজোর আয়োজন করা হয়।
ভবানীপুরের গণপতি ভক্ত মণ্ডল
এখানে পুজোর থিম করোনা-বিনাশ। গণেশ করোনাকে নাশ করছে। পুজোমণ্ডপে সেই ছবিই দেখা যাচ্ছে। মূর্তি তৈরিতে রয়েছেন মুম্বইয়ের শিল্পী। গণেশ চতুর্থীর দিন জ্বালানো হবে ১০৮টি প্রদীপ।
পুজোর আয়োজক গোপী ঠক্কর জানান, গতবারের মতো এবারও কঠিন পরিস্থিতির মধ্য়ে দিয়ে যেতে হচ্ছে সবাইকে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়েছি। তৃতীয় ঢেউ দোরগোড়ায়। তাই গণপতির কাছে প্রার্থনা, হে ভগবান বধ করো করোনাকে।
সল্টলেক মৈত্রী সঙ্ঘ
সেখানে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডল। যাতে মানুষ দূর থেকে দেখতো পারেন। চন্দনগরের আলো ব্যবহার করা হয়েছে। গণেশ পুজোর আরাধনা যেমন ভাবে করা হয়, সেটাই থিমে তুলে ধরা হয়েছে। পুজো কমিটির এক্জিকিউটিভ সদস্য শুভজিৎকুমার দে জানান, বাইরে থেকে যাতে সবাই দেখতে পান, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় যুবক-যুবতী অনুষ্ঠানের আয়োজন।
বৈশাখী যুব ইউনাইটেড ক্লাব
ওই ক্লাবের সভানেত্রী অনিতা মণ্ডল বলেন, গণেশ পুজো ছোট করেই করছি। অনুষ্ঠান করছি না। শনিবার ভোগের আয়োজন করা হয়েছে।
ভবানীপুর গণপতি উৎসব কমিটি
সেখানে থাকে জাগরণ-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুজো কমিটির সম্পাদক কুণাল সিং বলেন, জাগরণ করাই। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। চারদিনের পুজো হচ্ছে। ভোগ বাড়িতে দেওয়া হবে। বেশি জামঁজমক না করে সাধারণ প্যাণ্ডেল করা হয়েছে। বাদামতলা থেকে মূর্তি আনা হচ্ছে। এদিকে, দমদমের বন্ধুবান্ধব ক্লাব গণেশ পুজোর আয়োজন করেছিল। থিম নয়, তাদের পুজোয় সাবেকিয়ানার ছবি।
পোস্তা বাজার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন
পুজোর আয়োজন করেছে পোস্তা বাজার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনও। সভাপতি সীতানাথ ঘোষ জানান, ১০ বছর ধরে সেখানে পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। তবে করোনার জন্য জৌলুস কমেছে।
সিদ্ধিদাতা গণেশের (Siddhidata Ganesh) জন্মোৎসব গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi) নামে পরিচিত। ভাদ্রপদ মাসের চতুর্থী তিথির শুক্লপক্ষে সাধারণত পালিত হয় এই উৎসব। বিশ্বাস করা হয় যে, নিষ্ঠা করে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে সিদ্ধিদাতার পুজো করলে, সুখ -শান্তি বজায় থাকে, সমৃদ্ধি হয় এবং সমস্ত বাধা দূর হয়। গণপতিকে (Ganpati) ভালবেসে ভক্তরা একাধিক ভোগ (Bhog) উৎসর্গ করেন। তবে তার মধ্যে গণেশ চতুর্থীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কিছু প্রচলিত ভোগ। এগুলো গণেশের অত্যন্ত প্রিয়। নিষ্ঠা করে এই ভোগ উৎসর্গ করলে সিদ্ধিদাতা সন্তুষ্ট হন। গণেশের আরেক নাম মোদকপ্রিয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি।
একবার স্বর্গে, দেবী পার্বতী, একটি মোদক উপহার স্বরূপ পান। কিন্তু কে খাবে সেই একটি মোদক এই নিয়ে কার্তিক ও গণেশের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। শেষমেশ দেবী বলেন, যে তিনবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে আগে আসতে পারবে, সে মোদকটি পাবে। কার্তিক গোটা পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে শুরু করেন। অন্যদিকে, গণেশ, পার্বতীকে প্রদক্ষিণ করে বলেন "তুমিই আমার পৃথিবী"। সন্তুষ্ট হয়ে দেবী তাঁর হাতেই মোদকটি দেন।
গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে অভিনব লাড্ডু তৈরি করল সালকিয়ার এক মিষ্টির দোকান। কম মিষ্টির এই লাড্ডুর নাম অর্গানিক ডায়াবেটিক লাড্ডু।
চেটেপুটে এই লাড্ডু খেতে পারবেন ডায়াবেটিক রোগীরাও। গণেশ পুজোর আগে এর চাহিদা তুঙ্গে।
সুগার রোগীদের আর লুকিয়ে মিষ্টি খেতে হবে না। তাদের কথা ভেবে গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে এক অভিনব লাড্ডু তৈরি করেছে সালকিয়া চৌরাস্তার কাছে এক মিষ্টির দোকান। খেতেও সুস্বাদু। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক নয় এমনটাই দাবি দোকান মালিক অভিজিৎ দাসের।