অশান্ত পরিস্থিতি থেকে কিছুটা শান্তি পেতে, মন্ত্রোচ্চারণ করুন মহাদেবের। মনের শান্তির পাশাপাশি বিপদমুক্ত হবেন আপনি। মনে করা হয় সোমবার দেবাদিদেব মহাদেবের দিন। তাই এদিন মহাদেবের পুজো করেন তাঁর অগণিত ভক্তেরা।
শিব মন্দিরগুলিতেও সোমবার করে হয় বিশেষ পুজো। অনেকে আবার এদিন উপবাসে করে শিবের মাথায় জল ঢেলে, পায়ে ফুল- বেলপাতা দেন। বহু বাড়িতে সোমবার নিরামিষ খাওয়ার চলও আছে।
প্রতি সোমবার ভক্তি মনে মহাদেবের পায়ে ফুল, বেলপাতা অর্পণ করে আরতি করলে জীবনে কোনওরকম বিপদ-আপদ আসবে না৷ সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু মন্ত্রোচ্চারণ করে পুজো করুন৷
এই মন্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। এছাড়াও শিব পুজোর সময় পাঠ করতে পারেন - শিব গায়ত্রী মন্ত্র,পঞ্চকেশরী শিব মন্ত্র, রুদ্র মন্ত্র, ধ্যান মন্ত্র, একাদশা রুদ্র মন্ত্র।
মহাদেবের মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র:
ওঁ ত্রম্বকং য্জামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্ ।
উর্বারূপমিব বন্ধনান মৃতৌমোক্ষীয় মামৃতাত !!
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের গুরুত্ব:
মৃত্যুকে জয় করার মন্ত্র হল মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। পুরাণমতে মৃকান্দা ঋষির মাত্র ১২ বছর বয়সী পুত্রকে যমরাজ নিয়ে যেতে এসেছিলেন। কিন্তু তখন ওই ঋষি পুত্র বালক মার্কণ্ড মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করছিল। তখন যমরাজ বুঝতে পারেন যে এই মন্ত্রের উপেক্ষা করে তিনি যদি ওই ঋষি পুত্রকে নিয়ে যান, তাহলে তাঁকে মহাকালের রোষানলে পড়তে হবে। মতে মৃত্যুও মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রকে ভয় পায়।
পুরাণের কাহিনী:
পুরাণ মতে, একবার যমরাজ, মৃকান্দা ঋষির মাত্র ১২ বছর বয়সী পুত্রকে নিয়ে যেতে এসেছিলেন। কিন্তু তখন সেই বালক মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করে। তখন যমরাজ এই মন্ত্র উপেক্ষা করে ঋষি পুত্রকে নিয়ে যেতে পারেননি। কারণ তিনি জানতেন, নয়তো তাঁকে মহাকালের রোষানলে পড়তে হবে। বালক মার্কণ্ড নিজের প্রাণের ভয়ে মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের রচনা করেছিলেন। এরপর মহাকালের আশির্বাদে সে নতুন জীবন পায়। আর এইভাবেই শুরু হয় মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র।
মহাদেবের মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠের নিয়ম:
শাস্ত্র মতে, সপ্তাহের শুরুর দিন অর্থাৎ সোমবার এই মন্ত্র জপ করলে, মহাদেব সন্তুষ্ট হন এবং জরা ব্যাধি থাকে না। এই মন্ত্র ১০৮ বার পাঠ করতে হয়। বেলপাতা, ধুতুরা, আকন্দ, অপরাজিতা, কলকে প্রভৃতি ফুল শিবের প্রিয় বলে জানা যায়। তবে মহাদেব বেলপাতাতেই সবচেয়ে বেশি তুষ্ট হন। তাই যে কোনও একটি দিয়ে নিষ্ঠা করে পুজো করলেও সন্তুষ্ট হন ভোলেনাথ।
প্রসঙ্গত, সামনেই মহা শিবরাত্রি। এদিনও পাঠ করতে পারেন মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনা করার সর্বশ্রেষ্ঠ দিন মহা শিবরাত্রি।
সাধারণত ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে শিবরাত্রির তিথি পড়ে। এই বছর ১ মার্চ, মঙ্গলবার পড়েছে মহাশিবরাত্রির তিথি। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ২.২৩ মিনিট থেকে ১ মার্চ রাত ১২.৩৯ মিনিট পর্যন্ত থাকবে শিব চতুর্দশীর তিথি।