মাস খানেক পরেই দুর্গাপুজো। মহালয়ার দিন থেকে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। তার আগে ১৫ দিন চলে পিতৃপক্ষ। এই পিতৃপক্ষের শেষ দিন পিতৃ তর্পণ ঘিরে হিন্দু ধর্মে নানা রীতিনীতি রয়েছে। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদে পিতৃপক্ষ শুরু হয় এবং অমাবস্যা তিথি অবধি থাকে।
এই বছর পিতৃপক্ষ শুরু হবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে এবং ২১ সেপ্টেম্বর। মহালয়ার দিন শেষ হয়ে দেবীপক্ষ শুরু হবে। এদিকে ৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রগ্রহণ। হিন্দু ধর্মে এই ১৫ দিনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কারণ এই সময়ে মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধ, পিণ্ডদান এবং তর্পণ করে।
বিশ্বাস করা হয়, পিতৃপক্ষের সময় মৃত পূর্বপুরুষরা পৃথিবীতে আসেন এবং এই সময়ে তাদের জন্য তর্পণ করা হলে তাদের আত্মা শান্তি পায়। এছাড়াও, তারা সুখী হন এবং পরিবারকে সুখ ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ করেন।
পিতৃ পক্ষের শ্রাদ্ধ ও তর্পণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শাস্ত্র মতে কোনও মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধ শান্তি করলে, তাঁর আত্মা প্রশান্তি লাভ করে এবং সেই আত্মা মুক্তি লাভে সক্ষম হয়।
হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পিতৃ দোষ সবেচেয়ে জটিল রাশিফের ত্রুটি বলে বিবেচিত। ব্রহ্ম বৈবত পুরাণ মতে, একজন ব্যক্তির, তাঁর পিতৃ পুরুষদের সন্তুষ্ট করা উচিত, দেবতাদের আগে।
শাস্ত্র অনুসারে, পিতৃপক্ষের সময় কিছু ভুল সর্বদা এড়ানো উচিত। কারণ এই ভুলগুলির জন্য পূর্বপুরুরা রেগে যেতে পারে। যার ফলে পরিবারে সমস্যা, আর্থিক বাধা এবং মানসিক কষ্ট হতে পারে।
শাস্ত্র অনুসারে, পিতৃপক্ষের সময় পূর্বপুরুষদের মৃত্যু তিথিতে সর্বদা তর্পণ করা উচিত। কারণ এই দিনে তাদের শ্রাদ্ধ সম্পূর্ণ ফলপ্রসূ বলে মনে করা হয়।
তর্পণের পর ব্রাহ্মণদের অন্ন পরিবেশন করতে হবে। এতে পূর্বপুরুষদের আত্মা শান্তি লাভ করে। এতে পরিবারে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে এবং পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
পিতৃপক্ষের সময় নদী বা পবিত্র জলে স্নান করা উচিত। এছাড়াও, তর্পণের জন্য তিল, কুশ, সাদা ফুল এবং জল ব্যবহার করুন। তর্পণের সময় পূর্বপুরুষদের নাম নিয়ে জল উৎসর্গ করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
পিতৃপক্ষের সমাপ্তির পর, একজন ব্রাহ্মণ বা অভাবীকে দান করা উচিত। দান করলে পূর্বপুরুষরা খুশি হন এবং তাদের আশীর্বাদ পরিবারের উপর থাকে। এটি করলে জীবনে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি আসে।