কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে হয় শ্যামা পুজো বা কালী পুজো (Kali Pujo)। এর ঠিক আগের দিন বাঙালিরা প্রথা অনুযায়ী পালন করে ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi)। এই প্রথা ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি নিয়মকানুন। এদিন দুপুরে চোদ্দ রকমের শাক খেতে হয় এবং সন্ধ্যায় জ্বালাতে হয় চোদ্দটি প্রদীপ বা মোমবাতি। মনে করা হয়, ঘোর অমাবস্যার রাতে বিদেহী আত্মারা নেমে আসেন মর্ত্যলোকে। এর ঠিক পরের দিনই, চন্দ্রের তিথি নিয়ম মেনে, হয় দীপান্বিতা কালী পুজো।
চোদ্দ শাকে কী কী থাকে বর্তমানে? (Bhoot Chaturdashi Choddo Shak)
১. ওল
২. কেও
৩. বেতো
৪. সর্ষে
৫. কালকাসুন্দে
৬. জয়ন্তী
৭. নিম
৮. হেলঞ্চা বা হিঞ্চে
৯. শাঞ্চে বা শালিঞ্চা
১০. গুলঞ্চ
১১. পলতা বা পটুক পত্র
১২. ভাঁটপাতা
১৩. শুলফা
১৪. শুষনী
আয়ুর্বেদে উল্লেখ আছে প্রাচীন বাংলার ১৪ টি শাক। যেগুলি, ঋতু পরিবর্তনের সময় রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
আয়ুর্বেদ মতে ১৪ শাক কোনগুলি? (Bhoot Chaturdashi 14 Shak, According To Ayurveda)
১. পালং
২. লাল
৩. সুষণি
৪. কুমড়ো
৫. পাট
৬. মেথি
৭. ধনে
৮. পুঁই
৯. নোটে
১০. মূলো
১১. কলমি
১২. গিমে
১৩. সরষে
১৪. লাউ অথবা হিঞ্চে
ভূত চতুর্দশী ২০২২ কবে? (When Is Bhoot Chaturdashi)
এই বছর কালী পুজো পড়েছে ২৪ অক্টোবর, সোমবার। সুতরাং ভূত চতুর্দশী পালন হবে ২৩ অক্টোবর, রবিবার।
ভূত চতুর্দশীতে কেন ১৪ শাক খেতে হয়? (Choddo Shak Ritual)
বাঙালিদের ঘরে ঘরে ভূত চতুর্দশীতে দুটি নিয়ম মূলত পালন করা হয়। বিশ্বাস অনুযায়ী, ভূত চতুর্দশীর দিনটি ১৪ পুরুষের জন্যে উৎসর্গ করা হয়। এই বিশেষ দিনে পূর্বপুরুষরা মর্ত্যে আসেন। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এই ১৪ পুরুষ , জল, মাটি, বাতাস ও অগ্নির সঙ্গে মিশে রয়েছেন। আর এজন্যেই মূলত মাটির মধ্যে জন্মানো ১৪ টি বিশেষ শাক খেয়ে ১৪ পুরুষদের উৎসর্গ করা হয় ভূত চতুর্দশীর দিনটি।
আবার অনেকে মনে করেন, চোদ্দ ভুবনের অধীশ্বরী দেবীর উদ্দেশ্যে চোদ্দ শাক খাওয়া এবং চোদ্দটি প্রদীপ জ্বালানো হয়। এর সঙ্গে যুগ যুগ ধরে জড়িয়ে রয়েছে অনেক আচার বিচার।
পূরাণ মতে, ভূত চতুর্দশীর রাতে শিবভক্ত বলি, মর্ত্যে আসেন পুজো নিতে। সঙ্গে আসেন তাঁর অনুচর ভূতেরা। চতুর্দশী তিথির ভরা অমাবস্যায় চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকে। সেই ঘন অন্ধকারে যাতে বলি রাজার অনুচরেরা বাড়িতে ঢুকে না পড়েন, তার ব্যবস্থাই করা হত প্রাচীন কালে।