আর একদিন বাদেই গোটা দেশজুড়ে পালন করা হবে দোল বা হোলির উৎসব। রঙের উৎসবে মাতোয়ারা হবে গোটা দেশ। দোলযাত্রার আগে ন্যাড়াপোড়া একটি ঐতিহ্যবাহী উত্সব। অশুভ শক্তিকে হারাতে কাঠ, কলার শুকনো পাতা, শুকনো ডালের পাশাপাশি তাতে কর্পূর, ঘি, আম কাঠ দেওয়ারও রীতি রয়েছে। রঙের উত্সবের আগে পালিত হয় ন্যাড়াপোড়া। বাংলায় যা ন্যাড়াপোড়া নামে পরিচিত, গোটা দেশে তা হোলিকা দহন। যদিও রীতি-রেওয়াজ পুরোটাই এক। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় রঙের উৎসব হোলি। ফাল্গুন পূর্ণিমার আগের দিনটি পালিত হয় হোলিকা দহন হিসেবে। এই বছর ২৫ মার্চ পালিত হবে দোল আর তার আগের দিন অর্থাৎ ২৪ মার্চ ন্যাড়াপোড়া বা হোলিকা দহন করা হবে।
দোল পূর্ণিমার সময়
শাস্ত্র মতে ফাল্গুন পূর্ণিমা তিথিতে ন্যাড়াপোড়া করা হয়। তার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদ তিথিতে হোলি খেলা হয়। এবার ২৪ মার্চ সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে। যা সমাপ্ত হবে পরের দিন ২৫ মার্চ দুপুর ১২টা ২৯ মিনিটে।
ন্যাড়াপোড়া বা হোলিকা দহনের শুভ সময়
২৪ মার্চ ভদ্রার অনুপস্থিতিতে প্রদোষ কালে পূর্ণিমা তিথিতে হোলিকা দহন বা ন্যাড়াপোড়া করা হবে। ২০২৪ সালে হোলিকা দহনের শুভক্ষণ রাত ১১টা ১৩ মিনিট থেকে ১২টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত। হোলিকা দহনের জন্য মোট ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট সময় পাওয়া যাবে।
শুভ শক্তির জয়
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, হোলিকা দহনের মাধ্যমে অশুভ শক্তিকে পুড়িয়ে শুভ ও ইতিবাচক শক্তি ফিরিয়ে আনার এক প্রয়াস। তাই এদিন বেশ কিছু প্রতিকার পালন করারও রীতি রয়েছে। হোলিকা দহনের সময় কর্পূর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশ কিছু উপাদান যোগ করলে আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটে। জীবনের সব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করে।
কর্পূর ও লবঙ্গ
বাড়িতে নেতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পেলে নিত্য অশান্তি, ঝামেলা ও আর্থিক অনটন লেগেই থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে হোলিকা দহনের দিন একটি মাটির পাত্রে বিজোড় সংখ্যক কর্পূর দিন। কর্পুর নেওয়ার মতো একই সংখ্যক লবঙ্গ যোগ করুন। তা জ্বালিয়ে ঘরের প্রতিটি কোণে ঘুরিয়ে ছড়িয়ে দিন। ঘরে ছড়িয়ে থাকা নেতিবাচক শক্তিগুলিও ঘর থেকে দূর হয়ে যায়, এছাড়া ইতিবাচক শক্তির সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। মনে রাখবেন সূর্যাস্তের আগে এই প্রতিকার মেনে চললে উপকার পাবেন।
কর্পূর ও গোলাপের পাপড়ি
যদি আর্থিক সঙ্কট দিন দিন বেড়েই চলে, অর্থ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভুগতে থাকেন, তাহলে হোলিকা দহনের রাতে কিছু গোলাপের পাপড়ি নিয়ে কর্পূর দিয়ে পুড়িয়ে দিন। এবার সেই ভষ্ম হোলিকার আগুনে দিয়ে দিন। এই প্রতিকারে আপনার সব ধরনের সমস্যা কেটে যেতে পারে। আসতে পারে সুখ-সমৃদ্ধির বন্যা।