২০২১ সালের মহাকুম্ভের (Mahakumb) জন্য হরিদ্বারে (Haridwar) চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি পর্ব। ধার্মিক এই শহর হরিদ্বার এবছর দিনে প্রায় ১০ লক্ষ এবং বিশেষ দিনগুলিতে ৫০ লক্ষ পুণ্যার্থী ও সাধুদের আগমন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও করোনা ভাইরাসের ভীতি সকলের মনেই রয়েছে। পুরো শহরে পোস্টার, হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গেছে ইতিমধ্যে।
উত্তরাখণ্ড সরকার (Uttarakhand Government) এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এরকম বড় মাপের একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ও সেটা সুষ্ঠভাবে মেটানো এই মুহূর্তে খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। সেই নিয়মাবলী মেনেই কুম্ভ মেলার আয়োজন করতে হবে।
* উত্তরাখণ্ড সরকার নিশ্চিত করবে যে, কুম্ভ মেলার কাজে যুক্ত সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির কর্মীদের যেন সঠিক টিকাকরণ হয়।
* উত্তরাখণ্ড সরকারের অধীনে সকল কে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
* সকলকে রাজ্যের নিকটতম কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র / জেলা হাসপাতাল / মেডিকেল কলেজ থেকে একটি বাধ্যতামূলক মেডিকেল শংসাপত্র গ্রহণ করতে হবে।
* উত্তরাখণ্ড সরকার এই প্রয়োজনীয়তাটি সমস্ত রাজ্যে আগে থেকেই ব্যাপকভাবে প্রচার করবে, স্পষ্টভাবে উল্লেখ করবে যে দুর্বল জনগোষ্ঠী (বয়স ৬৫ বছরের বেশি, গর্ভবতী মহিলা, ১০ বছরের কম বয়সী শিশু, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ, সেরিব্রো-ভাসকুলার ডিজিজ, ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, ইমিউন-দমন এবং ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত) এর মতো অন্তর্নিহিত কোমর্বিডিটি আছে এমন ব্যক্তিদের কুম্ভ মেলায় অংশ নিতে না করা হচ্ছে।
* উচ্চতর ঝুঁকিতে থাকা রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা যেমন, বয়স্ক কর্মচারী, গর্ভবতী কর্মচারী এবং যেসব কর্মচারীর চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন (উপরে বর্ণিত হিসাবে) তাঁদের অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্যে তাঁদের সামনের সারির কর্মী হিসাবে কাজ করতে দেওয়া হবে না।
কোভিড ১৯ রুখতে ব্যবস্থা
* সকলকে অন্তত ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
* ফেস কভার বা মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সরকার অনুমোদিত মাস্ক বিতরণ কিওস্কগুলি প্রবেশাধারে এবং পার্কিংয়ের জায়গায় থাকবে। যাদের কেনার সামর্থ্য নেই, তাঁদের জন্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণের ব্যবস্থাও থাকবে।
* মাস্ক না পরলে কিংবা শারীরিক দূরত্বের নিয়ম না মানার জন্যে জরিমানা দিতে হবে।
* হাত দৃশ্যমান নোংরা না থাকলেও সাবান দিয়ে কমপক্ষে ৪০-৬০ সেকেন্ড ধোয়া অনুশীলন করার পরামর্শ। অ্যালকোহল-ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজারগুলির ব্যবহার (কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য) যেখানেই সম্ভব হবে।
* জনসাধারণের এলাকায় হ্যান্ড ওয়াশিং স্টেশন স্থাপন এবং সাবান ও জলের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। পা- চালিত জলের কল এবং যোগাযোগহীন সাবান বিতরণকারীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
* কাশি , হাঁচির সম্ম্যেমুখ ধাকতে হবে এবং ব্যবহৃত টিস্যু বা রুমালগুলি সঠিক জায়গায় ফেলতে হবে।
* কোনও রকম অসুস্থতার লক্ষ হলে প্রাথমিক পর্যায়ে রাজ্য এবং জেলা হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে হবে।
* যেখানে সেখানে থুথু ফেলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
* আরোগ্য সেতু অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল এবং ব্যবহারের পরামর্শ সকলকে দেওয়া হয়েছে।
* সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে COVID-19-এর আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে।
* মেলায় যাওয়ার ৭২ ঘন্টা আগে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে এবং সেই নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে। সেই রিপোর্ট দেখেই পুণ্যার্থীদের কুম্ভ মেলায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। পুণ্যার্থীরা তাঁদের মোবাইল ফোনে বা হার্ড কপিগুলিতে এই রিপোর্টগুলি আনতে পারেন।
সাধারণত ১২ বছর অন্তর আয়োজন করা হয় কুম্ভমেলার। কিন্তু এবার ১১ বছর পরে আয়োজন করা হচ্ছে সেটি। এই বছর হরিদ্বারের কুম্ভ মেলায় চারবার পুণ্য স্নান হবে। তারিখগুলি হল- ১১ মার্চ মহাশিবরাত্রির দিন, ১২ এপ্রিল সোমবতি অমাবস্যায়,১৪ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তিতে এবং ২৭ এপ্রিল বৈশাখীতে হবে।