ধর্মীয় শাস্ত্রে বেশিরভাগ উৎসবে এবং পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে পবিত্র নদীতে স্নানের বিশেষ গুরুত্ব বলা হয়েছে, যার মধ্যে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী, নর্মদা, কাবেরী, গোদাবরী প্রভৃতি প্রধান নদী। এই কারণেই এই পবিত্র নদীর তীরে বড় বড় উৎসবে মেলা বসে, যেখানে ভক্তরা নদীতে স্নান করে পূজা-দান ইত্যাদি করে এবং জীবনের সুখ, সমৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য ইত্যাদি কামনা করে। এইভাবে সংক্রান্তি উপলক্ষে পবিত্র নদীতে স্নানের আচার থাকলেও সমস্ত সংক্রান্তির মধ্যে মকর সংক্রান্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।
আজ মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti 2023) । যদিও শনিবার সন্ধে ৬টা ৫৩ মিনিট থেকেই সংক্রান্তির পূণ্যলগ্ন শুরু হয়েছে । রবিবারই স্নানের তিথি পালন করা হচ্ছে । দেশের বিভিন্ন জায়গায় গঙ্গাসাগরে এদিন ভোরবেলা থেকেই শুরু হয়েছে পূণ্য স্নান । সূর্য পুজোর মধ্যে দিয়ে লাখো লাখো ভক্ত পূণ্য অর্জনে ডুব দিচ্ছেন সাগরে । শুধু গঙ্গাসাগর (Ganga sagar ) নয়, এলাহাবাদের প্রয়াগ, হরিদ্বার এবং দেশের বিভিন্ন পুণ্য নদীতে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে ভিড় করেছেন পূণ্যার্থীরা।
মকর সংক্রান্তির পূন্য় তিথিতে স্নান, সূর্য প্রণামের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ঘুড়ি ওড়ানো হয় । বাঙালি বাড়িতে তৈরি বয় পিঠে, পায়েস, পাটিসাপটা । বাংলার মকর সংক্রান্তি বা পৌষ সংক্রান্তি এদিন কোথাও পোঙ্গল নামে কোথাও লোহরি আবার কোথাও ভোগালি বিহু নামে উৎসব পালিত হচ্ছে ।
গঙ্গাসাগর স্নান
গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে স্নান চলছেছে । স্নান যাতে নির্বিঘ্নে হয়, কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । শনিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে পুণ্য তিথি। চলবে রবিবার সন্ধ্যা প্রায় ৭টা পর্যন্ত। মকর সংক্রান্তিতে (Makar Sankranti 2023) পুণ্যস্নানের জন্য ইতিমধ্যেই লাখো লাখো মানুষের ঢল মেনেছে গঙ্গাসাগরে (Gangasagar Mela 2023)। রকমারি আলোর সাজে সেজে উঠেছে গোটা মেলা প্রাঙ্গন।
নাইট ড্রোন ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে এবারের গঙ্গাসাগর মেলার কিছু চোখ ধাঁধানো ছবি। সূত্রের খবর, শনিবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে ভিড় করেছেন প্রায় ৩৯ লক্ষ মানুষ। অন্যদিকে সাগর মেলাকে জমজমাট করতে একাধিক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে।
এবারে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গনেই রাজ্যের পাঁচটি মন্দিরকে একসঙ্গে দেখতে পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। রয়েছে তারকেশ্বর (Tarakeshwar), কালীঘাট (Kalighat), দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar), তারাপিঠ এবং জহুরা কালীবাড়ি। মেলার মোট বাজেট ১৫০ কোটি টাকা। তবে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে গোটা মেলা প্রাঙ্গনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বেশ আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। নজরদারির জন্য পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বসেছে ৬টি টাওয়ার। দূর-দূরান্তের পুণ্যার্থীদের কথা মাথায় রেখে ৭ টি ভাষায় চলছে মাইকিং।