মহালয়ার (Mahalaya) আগে ১৫ দিন চলে পিতৃপক্ষ। উমার মর্তে আগমনের আগে পিতৃপক্ষের (Pitri Paksh) শেষে পিতৃ তর্পণ (Pitri Tarpan) ঘিরে হিন্দু ধর্মে নানা রীতিনীতি রয়েছে। শাস্ত্র মতে কোনও মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধ শান্তি করলে, তার আত্মা প্রশান্তি লাভ করে এবং সেই আত্মা মুক্তি লাভে সক্ষম হয়। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে গণেশ উৎসবের পরবর্তী ভাদ্র পূর্ণিমা তিথিতে পিতৃপক্ষের সূচনা হয়ে মহালয়ার দিন সমাপ্তি হয়।
সধারণত আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদে পিতৃপক্ষ শুরু হয় এবং অমাবস্যা তিথি (Amavasya Tithi) অবধি থাকে। এবছর পিতৃপক্ষ শুরু হচ্ছে ১০ সেপ্টেম্বর। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর, মহালয়ার দিন শেষ হয়ে মাতৃপক্ষ শুরু হবে। পুরাণ অনুসারে, পিতৃ পক্ষের আচারের সময় যে কোনও ভুল-ত্রুটি পূর্বপুরুষদের ক্রুদ্ধ করতে পারে। যা পিতৃ দোষের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই সময়কালে কিছু কাজ এড়িয়ে চলাই ভাল। দেখে নিন এক নজরে...
* কোনও নতুন কাজ শুরু করবেন না
পিতৃপক্ষের সময়কাল অশুভ বলে বিবেচিত। তাই এই সময়কালে নতুন কিছু শুরু না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই সময়ে নতুন কিছু কেনা উচিত না। এমনকী যদি কোনও সুসংবাদ পাওয়া যায়, তবে তা পিতৃপক্ষের পরে উদযাপন করা উচিত।
* পেঁয়াজ-রসুন খাবেন না
হিন্দু শাস্ত্রে, পেঁয়াজ এবং রসুনকে 'তামসিক' বলে মনে করা হয়, যা আমাদের ইন্দ্রিয়কে প্রভাবিত করে। পিতৃ পক্ষের সময়, খাবারে পেঁয়াজ-রসুনের ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
* অ্যালকোহল সেবন এবং মাংস খাবেন না
পিতৃপক্ষ, পূর্বপুরুষদের জন্য উৎসর্গীকৃত। তাই এই সময়কালে মদ বা আমিষ খাওয়া এড়িয়ে চলুন। মনে করা হয়, এই নিয়ম না মানলে পূর্বপুরুষরা অসন্তুষ্ট হতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি হঠাৎ জীবনে অনেক অসুবিধা এবং ব্যর্থতার মুখোমুখি হতে পারেন।
* উদযাপন করবেন না
পিতৃপক্ষের সময় কোনও উৎসবের অংশ হবেন না বা উদযাপন করবেন না। অনুষ্ঠান পালনকারী ব্যক্তির উচিত মনকে একাগ্র রাখা। এই সময়কালে যে কোনও ধরণের উদযাপন আপনার পূর্বপুরুষদের প্রতি আপনার শ্রদ্ধাকে প্রভাবিত করে।
* এই কাজগুলি এড়িয়ে চলুন
এই ১৫ দিন নখ, চুল- দাড়ি কাটবেন না। এছাড়াও এই সময়কালে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত না হওয়াই ভাল। মনের অপবিত্রতা পূর্বপুরুষদের অসন্তুষ্ট করতে পারে।
বিশ্বাস করা হয় যে পিতৃপক্ষে শ্রাদ্ধ শান্তি ও তর্পণ করলে পূর্ব পুরুষেরা খুশি হন এবং আশীর্বাদ করেন। তাঁদের কৃপায় জীবনের অনেক বাধা দূর হয়। জীবনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে। জ্যোতিষী ডাঃ অরবিন্দ মিশ্রর মতে, শ্রাদ্ধ না করলে আত্মা মুক্তি পায় না। পিতৃপক্ষের নিয়মকানুন পালন করলে দাতব্য করলে রাশিচক্র থেকে পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।