শুরু হচ্ছে পবিত্র শিবের মাস- শ্রাবণ। এই মাসে ভোলেনাথের পুজো করেন ভক্তরা। বিশ্বাস করা হয় যে, শ্রাবণের সোমবার উপবাস পালন করলে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি এই পবিত্র মাসে শিবের আরাধনা করলে অশুভ যোগের বিনাশ হয়।
শ্রাবণ মাস ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। শাস্ত্রে এমন অনেক জিনিসের কথা বলা হয়েছে, যা নিবেদন করলে ভগবান শিব প্রসন্ন হন। শ্রাবণ মাসে যদি এই জিনিসগুলি মহাদেবকে নিবেদন করা হয়, তাহলে ভক্তের প্রতিটি ইচ্ছাপূরণ হয়।
ধুতুরা ফুল
শ্রাবণ মাসে শিবলিঙ্গে ধুতুরা ফুল নিবেদনের প্রথা রয়েছে। ধুতুরা ভগবান শিবের খুব প্রিয়। কথিত আছে শিবলিঙ্গে ধুতুরা ফুল অর্পণ করলে পুত্র লাভ হয়। শিব পুজোয় লাল ডাঁটিযুক্ত ধতুরাও দেওয়া হয়।
আকন্দ ফুল
আকন্দ ফুলও ভগবান শিবকে নিবেদন করা হয়। শিব পুরাণ অনুসারে, লাল এবং সাদা আকন্দ ফুল অর্পণ করলে, মোক্ষ লাভ হয়। মূল ফটকে এর গাছ লাগানোও খুব শুভ বলে মনে করা হয়।
শামী পাতা
ভগবান শিবের পুজোও শামী পাতা দেওয়া হয়। শামীকে শনিদেবের গাছ মনে করা হয়। তাই শিবলিঙ্গে পাতা অর্পণ করলে, ভোলেনাথের পাশাপাশি শনিদেবও প্রসন্ন হন। শনির ঢাইয়া ও সাড়ে সাতি চলছে এমন ব্যক্তিরাও এটি শিবলিঙ্গে অর্পণ করতে পারেন।
বেল পাতা
যদি জীবনে কোনও সংকট দেখা দেয় বা কাজে কোনও বাধা আসে, তাহলে অবশ্যই ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে বেলপাতা নিবেদন করুন। শাস্ত্র মতে বেল পাতার মূলে স্বয়ং ভগবান শিব বাস করেন।
ভাং
ভাং ভগবান শিবের খুব প্রিয়। এটি একটি নেশাজাতীয় উদ্ভিদ হলেও আয়ুর্বেদের পাশাপাশি শিবের পুজোতে এর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। শ্রাবণে ভাং দিয়ে শিবকে সাজিয়ে কাঙ্খিত বর পেতে পারেন।
এবছর শ্রাবণ মাসে মোট চারটি সোমবার পড়েছে
* ২৪ জুলাই (৭ শ্রাবণ) - প্রথম সোমবার
* ৩১ জুলাই (১৪ শ্রাবণ)- দ্বিতীয় সোমবার
* ৭ অগাস্ট (২১ শ্রাবণ)- তৃতীয় সোমবার
* ১৪ অগাস্ট (২৮ শ্রাবণ) চতুর্থ সোমবার
পুরাণ মতে শ্রাবণ মাসেই সমুদ্র মন্থন ঘটেছিল। সেই সময় মহাদেব, হলাহল বিষ পান করেছিলেন। সেই সময় বিষের তেজে তার শরীর নীল হয়ে যায় বলাই শিবের আরেক নাম -নীলকণ্ঠ। সেই সময় দেবী পার্বতী তার স্তন দুগ্ধ পান করিয়ে দেবাদিদেবের সমস্ত জ্বালা প্রশমন করেছিলেন। এই ভাবেই সৃষ্টির রক্ষা করেছিলেন মহাদেব, তাই তাকে 'সৃষ্টির রক্ষাকর্তা' বলা হয়।