দেবাদিদেব মহাদেবকে (Shiva), হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা বলে মনে করা হয়। সনাতন ধর্মের শাস্ত্র সমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপে ঘোষিত। শিব সৃষ্টি- স্থিতি- প্রলয়রূপ তিন কারণের কারণ। তিনি সমসাময়িক হিন্দুধর্মের তিনটি সর্বাধিক প্রাচীন সম্প্রদায়ের অন্যতম শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা। অশান্ত পরিস্থিতি থেকে কিছুটা শান্তি পেতে, সোমবার মন্ত্রোচ্চারণ করুন মহাদেবের। মনের শান্তির পাশাপাশি বিপদমুক্ত হবেন আপনি।
শিবের প্রিয় মাস শ্রাবণ (Sawan) আসতে চলছে। এই মাসে যারা ভক্তি মনে শিবের উপাসনা করেন, তাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। বাস্তুশাস্ত্রেও শ্রাবণ সংক্রান্ত অনেক বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। এই মাসে মহাদেবের পুজো করেন তার অগণিত ভক্তেরা। শিব মন্দিরগুলিতেও শ্রাবণের সোমবার করে হয় বিশেষ পুজো। অনেকে আবার এদিন উপবাসে করে শিবের মাথায় জল ঢেলে, পায়ে ফুল- বেলপাতা দেন। বহু বাড়িতে এই মাসের সোমবার নিরামিষ খাওয়ার চল আছে।
বিশ্বাস করা হয়, শ্রাবণে ভক্তি মনে মহাদেবের পায়ে ফুল, বেলপাতা অর্পণ করে আরতি করলে জীবনে কোনওরকম বিপদ-আপদ আসবে না৷ সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু মন্ত্রোচ্চারণ করে পুজো করুন৷ এই মন্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। এছাড়াও শিব পুজোর সময় পাঠ করতে পারেন - শিব গায়ত্রী মন্ত্র,পঞ্চকেশরী শিব মন্ত্র, রুদ্র মন্ত্র, ধ্যান মন্ত্র, একাদশা রুদ্র মন্ত্র।
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র একটি সর্বরোগ হরণকারী মন্ত্র। এই মন্ত্রটি ভগবান মহাদেবকে স্মরণ করে রচিত। এই মন্ত্রটি ঋগ্বেদেও (Rig Veda) দৃষ্ট হয় - আবার এই মন্ত্রটি মার্কণ্ডেয় পুরাণেও দৃষ্ট হয়। এই মন্ত্রটি জপ করলে মানুষ সব অশান্তি , রোগপীড়া ,ব্যাধি থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হয়।
মহাদেবের মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র (Mahamrityunjaya Mantra)
ওঁ ত্রম্বকং য্জামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্ ।
উর্বারূপমিব বন্ধনান মৃতৌমোক্ষীয় মামৃতাত !!
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের গুরুত্ব (Importance of Mahamrityunjaya Mantra)
মৃত্যুকে জয় করার মন্ত্র হল মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। পুরাণমতে মৃকান্দা ঋষির মাত্র ১২ বছর বয়সী পুত্রকে যমরাজ নিয়ে যেতে এসেছিলেন। কিন্তু তখন ওই ঋষি পুত্র বালক মার্কণ্ড মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করছিল। তখন যমরাজ বুঝতে পারেন যে এই মন্ত্রের উপেক্ষা করে তিনি যদি ওই ঋষি পুত্রকে নিয়ে যান, তাহলে তাঁকে মহাকালের রোষানলে পড়তে হবে। মতে মৃত্যুও মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রকে ভয় পায়।
এবছর শ্রাবণ মাসে মোট চারটি সোমবার পড়েছে
* ২৪ জুলাই (৭ শ্রাবণ) - প্রথম সোমবার
* ৩১ জুলাই (১৪ শ্রাবণ)- দ্বিতীয় সোমবার
* ৭ অগাস্ট (২১ শ্রাবণ)- তৃতীয় সোমবার
* ১৪ অগাস্ট (২৮ শ্রাবণ) চতুর্থ সোমবার