জ্যোতিষে শনির দশা বা ব্যক্র দৃষ্টির কথা শুনলে যে কোনও মানুষের মনে ভয় হয়। তার মধ্যে যদি সাড়ে সাতি (Sade Sati) চলে তা হলে তো কথাই নেই। কারণ আমরা জানি, শনি বিঘ্নকারক গ্রহ। সাড়ে সাতির প্রভাবে বিভিন্ন রাশির জাতকদের নানা বিঘ্ন বা কুপ্রভাব দেখা যায়। যেমন, কাজে বিলম্ব, সম্পর্কে অবনতি, ব্যবসায়ে ক্ষতি, অপবাদ, দুর্ঘটনা, পিতা-মাতার মৃত্যুযোগ ইত্যাদি। তবে সাড়ে সাতির প্রভাব সব সময় একই রকম ফল দেয় না। কখনও কখনও রাশিতে গ্রহের অবস্থানে কিছু ভালো প্রভাব দেখা যায়।
যে রাশির জাতকদের শনির সাড়ে সাতি দশা চলে তাঁরা সব দিক থেকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। শনির সাড়ে সাতি দশা সাধারণত শারীরিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিক তিন দিক থেকে ত্রিফলা আক্রমণ করে। গুরুজনদের স্বাস্থ্য সঙ্কট-সহ নানা রকম সমস্যা এনে দেয়। শনি গ্রহ যখন জন্মকালীন চন্দ্ররাশির দ্বাদশ, প্রথম ও দ্বিতীয় ঘর অতিক্রম করে এ সময় কালকে শনির সাড়ে সাতি বলা হয়। রাশিচক্রে শনি এক এক রাশি অতিক্রম করতে সময় লাগে আড়াই বছর। একে জ্যোতিষের ভাষায় একে ঢাইয়া বলে। তিন রাশি অতিক্রম করতে সময় লাগে সাড়ে সাত বছর। সে জন্যই একে শনির সাড়ে সাতি বলা হয়।
কোন রাশিতে চলছে সাড়ে সাতি:
২০২১ সালের শুরুতে গ্রহের অবস্থানে খুব বড় পরিবর্তন ঘটছে। কিছু গ্রহ সারা বছর তাদের বর্তমান অবস্থানে থাকবে। অন্যান্য গ্রহের সাথে যোগাযোগ তৈরি করে তাদের শুভ এবং প্রতিকূল ফল তৈরি করবে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মকর রাশিতে চলতে থাকা শনি তাদের জীবনে অশান্তির অবস্থা বজায় রাখবে। বর্তমানে কুম্ভ, ধনু ও মকর এই তিন রাশির জাতকদের শনির সাড়ে সাতি চলছে।
ধনু রাশির জাতকদের উপর সাড়ে সাতির প্রভাব থাকবে বছরভর। একই সময়ে মকর রাশিতে বছরের অর্ধেক সময় পর্যন্ত থাকবে। কুম্ভের জাতকদের সাড়ে সাতির প্রভাব থাকবে প্রাথমিক পর্যায়ে। মিথুন এবং তুলা রাশির জাতকদেরও শনির প্রভাব পড়বে। তব কিছু প্রতিকারের মাধ্যমেও এর প্রভাব খানিকটা কাটানো যায়। সাড়ে সাতি চলাকালীন বিবাহিত জীবনে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়। এই সময়ে মা-বাবার স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। তাঁদের মৃত্যুযোগও থাকে। বিশেষত যখন সাড়ে সাতি শেষ হওয়ার সময় এগিয়ে আসে।
প্রতিকারের জন্য কী করবেন
প্রতি শনিবার পিপুল গাছের নীচে সরষের তেলের প্রদীপ জ্বালুন। প্রতি দিন সন্ধ্যায় শনি মন্ত্র 'ওম শং শনৈগ্রহায় নমঃ' জপ করুন। যদি সময় খুব খারাপ যায় তবে শনিবার করে ছায়া দান করতে পারেন। খাবারে সরষের তেল, কালো ছোলা এবং গুড় অবশ্যই রাখুন। সকলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার বজায় রাখুন।