Advertisement

Kaushiki amavasya 2024: মা তারার আরেক নাম কৌশিকী কেন-এই অমাবস্যার মাহাত্ম্য কী? গায়ে কাঁটা দেওয়া সেই কাহিনি রইল

Devi Koushiki : কৌশিকী অমাবস্যা হল অশুভ শক্তি বিনাশের তিথি। এই দিনে আদ্যাশক্তি মহামায়ার আরাধনা করলে দেবীর অশেষ কৃপা লাভ করা যায় বলে মনে করা হয়। তারাপীঠকে সাধক বামাক্ষ্যাপা কৌশিকী অমাবস্যাতেই সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বলে প্রচলিত বিশ্বাস।

দেবী কৌশিকী আসলে কে?
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 02 Sep 2024,
  • अपडेटेड 2:22 PM IST

Devi Koushiki : কৌশিকী অমাবস্যা হল অশুভ শক্তি বিনাশের তিথি। এই দিনে আদ্যাশক্তি মহামায়ার আরাধনা করলে দেবীর অশেষ কৃপা লাভ করা যায় বলে মনে করা হয়। তারাপীঠকে সাধক বামাক্ষ্যাপা কৌশিকী অমাবস্যাতেই সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বলে প্রচলিত বিশ্বাস। কৌশিকী অমাবস্যা  একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন হিন্দুধর্মের মানুষের কাছে। এই অমাবস্যা তিথিতে অনেকে সাধনা করেন। দেবীর আরাধনা করা হয়। 

এবছর ১৬  ভাদ্র অর্থাৎ ২ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে  কৌশিকী অমাবস্যা তিথি ৷ থাকবে মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর ভোর পর্যন্ত ৷ জ্যোতিষ মতে, এই বিশেষ তিথিতে সামান্য কয়েকটি কাজ করলেই দেবী কৌশিকীর আশীর্বাদ আপনার উপর সারাবছর থাকবে ৷ এই তিথিতে তারাপীঠে সারারাত ধরে মা তারার বিশেষ পুজো করা হয়। আজ ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার, বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৬ ভাদ্র ভোর ৫টা ৫ মিনিটে অমাবস্যা পড়ছে। অমাবস্যা ছেড়ে যাবে আগামিকাল ভোর ৬টা ২৯ মিনিটে ।

প্রসঙ্গত, হিন্দুধর্মে দেব-দেবীর সংখ্যা অগণিত। কথিত আছে, হিন্দুধর্মে প্রায় ৩৩ কোটি দেবদেবী বর্ণনা রয়েছে। আজ  বাংলার প্রতিটি কালী মন্দিরগুলিতে কৌশিকী অমাবস্যা পালন করা হচ্ছে। বিশেষ করে, বীরভূমের তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো ও মঙ্গলারতি দেখতে, মঙ্গল কামনা করতে দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তরা ভিড় করেছেন। তারা মা ও দেবী কৌশিকী কি একই রূপ?ভাদ্র মাসের অমাবস্যাকে কেন কৌশিকী অমাবস্যা বলা হয়?

 

কে এই দেবী কৌশিকী?
দেবী কৌশিকী মহামায়ারই অন্যতম রূপ।কখনও অম্বিক, কখনও আবার মহাসরস্বতী আবার চণ্ডিকা নামেও পরিচিত। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, এই হিন্দুদেবী মহামায়ার রূপ হলেও তিনি অযোনিসম্ভবার শক্তির আধার। শুম্ভ-নিশুম্ভ দুই অসুর ভাইকে বধ করার জন্য কৌশিকী দেবী আবির্ভূতা হয়েছিলেন। ব্রহ্মার বর প্রাপ্তির পর অসুর শুম্ভ-নিশুম্ভের অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। শুম্ভ-নিশুম্ভের অত্যাচারে ত্রিলোক অশান্ত হয়ে পড়ে। অত্যাচারে অতিষ্ঠ এবং ভীত হয়ে দেবতারা অশুভ শক্তির বিনাশ এবং ত্রিলোকে শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে দেবী পার্বতীর শরণাপন্ন হন। দেবী পার্বতী অশুভ শক্তি বিনাশের উদ্দেশ্যে নিজের দেহকোষ থেকে সৃষ্টি করেন ভয়ঙ্কর দেবী কৌশিকীকে।  ঘন কালো মেঘবরণের মতো আবরণ ও দেহকোষ যখন মানস সরোবরে উদ্ভূত হয়, তখন দেবীর সৌন্দর্য আলোকসমান হয়ে ওঠে। এই অমাবস্যা তিথিতে দেবী কৌশিকী অশুভ শক্তি নাশ করে শুভ শক্তি প্রতিস্থাপন করেন। তন্ত্রশাস্ত্র মতে তন্ত্রসাধনার ক্ষেত্রে কৌশিকী অমাবস্যা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisement

অন্যদিকে লক্ষ্মীতন্ত্রে জানা যায়, ইন্দ্রকে দেবী লক্ষ্মী জানিয়েছিলেন, তিনিই হলেন সেই শক্তি যিনি গৌরী থেকে কৌশিকী রূপ ধারণ করেছিলেন। তিনিই অসুর ভ্রাতৃদ্বয়কে বধ করেছিলেন। তাই এদিনে লক্ষ্মীদেবীরও পুজো করা হয়ে থাকে। স্কন্দ পুরাণের দেবী কৌশিকীর বর্ণনা রয়েছে। দেবীমাহাত্ম্যম উল্লেখ রয়েছে, মহাদেবী মহামায়াক ত্বক বা আবরণ থেকে ঘননিশি কৌশিকীর রূপ ধারণ করেছিলেন, অন্ধকারের দেবীর শরীরে সৃষ্টি হয় আদ্যাশক্তি, রূপ নেন কৌশিকী রূপ। কালিকা রূপ নিয়ে বধ করেছিলেন দুই অসুরকেও।


কৌশিকী অমাবস্যা অন্য সমস্ত অমাবস্যার থেকে আলাদা
তন্ত্রমতে ও শাস্ত্রমতে ভাদ্র মাসের এই তিথিটি একটু বিশেষ ৷ কারণ অনেক কঠিন ও গুহ্য সাধনায় এই দিনে আশাতীত ফল মেলে ৷ এই দিন সাধকরা কুন্ডলিনী চক্রকে জয় করেন ৷ বৌদ্ধ ও হিন্দুতন্ত্রে এই দিনের এক বিশেষ মহাত্ম্য আছে, তন্ত্রমতে এই রাতকে তারারাত্রি বলা হয় ৷ এই রাতের একটি বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরকের মাঝের দুয়ার উন্মুক্ত হয়, সেই সময় সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধ্বনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি নিজের সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করেন, ও সিদ্ধি লাভ করে। । শাস্ত্র মতে তো বটেই, ঐতিহাসিক তাত্‍পর্য হিসেবেও এর রয়েছে গুরুত্ব। তাই  তন্ত্রসাধনার মাধ্যমে সিদ্ধিলাভ করার প্রয়াসে এই অমাবস্যাকেই বেছে নেন সাধু-সন্ন্যাসীরা। সাধারণত শাক্ত বাঙালিদের কাছে কালী অত্যন্ত অপরিহার্য ও কাছের দেবী। কালীর রয়েছে বিভিন্ন রূপ। কালীর প্রতিটি রূপকেই বিশেষভাবে আরাধনা করেন বাঙালিরা। ভাদ্রমাসের প্রথম অমাবস্যাকে কৌশিকী অমাবস্যা বলা হয়। রয়েছে পৌরাণিতক কাহিনিও। এই শুভ তিথিকে তারানিশি ও বলা চলে। সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করা হয়, কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে বিশেষ পুজো ও রীতি মেনে দ্বারকা নদীতে ডুব দিলে বা স্নান করলে মোক্ষলাভ করা সম্ভব হয়। এমনকি কুম্ভমেলায় সিদ্ধিলাভের সমান পুণ্য পাওয়া যায়। এই মনে করেই তন্ত্র-সাধনার মাধ্যমে জীবনে সব সঙ্কট কাটাতে ও পাপ থেকে মুক্তি পেতে এই অমাবস্যায় লক্ষাধিক ভক্ত তারাপীঠ মন্দিরে ভিড় করেন।

দেবী কৌশিকীর আশীর্বাদ আপনার উপর সারাবছর থাকতে এদিন কী করবেন ? 
এই দিনে গঙ্গাস্নান করুন ৷ স্নান করে সূর্য দেবতাকে প্রণাম করুন ৷ দু’দিন উপোস রাখতে পারলে খুবই ভালো হয় ৷ সেটা না-পারলে এই দু’দিন ভুলেও আমিষ খাবেন না ৷ তারা মায়ের পায়ে সিঁদুর ও লাল রক্তজবা নিবেদন করুন ৷ এই অমাবস্যা তিথিতে সন্ধের পর বাড়ির সদর দরজার সামনে দু'টি তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালান ৷ এই তিথি চলাকালীন ঘরে এঁটো বাসন রেখে দেবেন না । ঘর পরিষ্কার রাখুন ৷ দরিদ্র মানুষকে সামর্থ্য মতো কিছু দান করুন ৷ জ্যোতিষ মতে, কৌশিকী অমাবস্যা চলাকালীন এই কাজগুলি করলেই প্রসন্ন হবেন দেবী কৌশিকী ৷ কথিত রয়েছে, এই তিথিতে উপবাস রেখে দেবীর পুজো করলে মনের ইচ্ছেপূরণ হয় ৷

Advertisement

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement