সামান্যতম ভুলে রঙ বদলে সম্পূর্ণ রক্তবর্ণ হয়ে উঠল যোগনাথতলার ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গা। নদিয়ার নবদ্বীপে প্রাচীনতম পারিবারিক দুর্গাপূজাগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নবদ্বীপ শহরে যোগথতলা এলাকার ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজো। ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গা লাল দুর্গা বলে খ্যাত। প্রতিমার বর্ণ টকটকে লাল, রক্তবর্ণও বলা যেতে পারে। প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো এই লাল দুর্গা মায়ের রূপ রক্তবর্ণ হওয়ার পিছনে রয়েছে এক অলৌকিক ঘটনা। লোকমুখে শোনা যায়, এটি সতেরো শতকের ঘটনা। নবমীর দিন মায়ের পুজো চলছিল। তৎকালীন কর্তা রাঘবরাম ভট্টাচার্য সেদিন তিথি চলে যাচ্ছেন বলে একটু দ্রুত চণ্ডীপাঠ করছিলেন। রাঘবরামের পুত্রের কানে বাবার চণ্ডীপাঠ শুদ্ধ লাগল না। তিনি বাবাকে এসে বললেন, চণ্ডীপাঠ ঠিক হচ্ছে না। সেই কথা শুনে রাঘবরাম পুত্রকে বললেন, বেশ তুমি তা হলে চণ্ডী পাঠ করতে বসে যাও। বাবার কথামতো পুত্র বসলেন চণ্ডী পাঠ করতে। পুত্র বসলেন পূর্ব দিকে মুখ করে। ঠিক তখনই আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটল! মা দুর্গার মূর্তি সহসা দিক পরিবর্তন করে, দক্ষিণমুখো অবস্থা থেকে পশ্চিমমুখো হয়ে রাঘবরামের পুত্রের একেবারে মুখোমুখি হয়ে যায়। এবং মা দুর্গার গাত্রবর্ণও ক্রমশ বদলে যেতে থাকে। ওদিকে চণ্ডীপাঠরত রাঘবরামের ছেলের শরীর তখন ক্রমশ ফ্যাকাসে হতে শুরু করে। শেষে তাঁর দেহ প্রায় রক্তশূন্যই হয়ে পড়ে। এবং পুজোর শেষে সেদিন তাঁর প্রাণবিয়োগও ঘটে।সেই থেকে চণ্ডীপাঠ হয় না এ বাড়ির পুজোয়।