Home Loan Vs House Rent: নিজের একটা বাড়ির স্বপ্ন অনেকেই দেখেন। সেই স্বপ্ন পূরণে অনেকেই হয়তো পরিকল্পনাও শুরু করে দিয়েছেন। এখন সাধারণ মানুষের ‘নিজের বাড়ি’র স্বপ্নপূরণের একমাত্র ভরসা গৃহঋণ (Home Loan)। অনেক ক্ষেত্রেই এখন স্বামী-স্ত্রী একত্রে হোম লোন নেন। এতে গৃহঋণের মাসিক কিস্তির বোঝাও সমানভাবে ভাগ হয়ে যায় পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী’র মোট উপার্জনে লোন পেতেও সুবিধা হয়। তবে লোন নিয়ে বাড়ি কেনা বা তৈরি করা কি আদৌ সাশ্রয়ী সিদ্ধান্ত? এর উত্তর হল না। বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞদের মতে, Home Loan নিয়ে বাড়ি কেনার চেয়ে ভাড়া বাড়িতে থেকে সঞ্চয় বা পুঁজি বাড়িয়ে ভবিষ্যত সুরক্ষিত করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কেন? চলুন হিসেবটা সবিস্তারে বুঝে নেওয়া যাক...
বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে EMI-এর বোঝা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে, বাড়ছে ফ্ল্যাট-জমির দাম। এমন পরিস্থিতিতে, প্রশ্ন হল লোন নিয়ে আপনার নিজের বাড়ি কেনা জরুরি নাকি EMI-এর চেয়ে কম ভাড়ায় বসবাস করাটা সাশ্রয়ী বিকল্প?
আরও পড়ুন: ঠিক কখন-কোথায় বিনিয়োগ করলে Tax-ও বাঁচে, ভবিষ্যতে ভাল রিটার্নও মেলে?
হোম লোন নেওয়ার সমস্যা কোথায়?
• ঋণ নিয়ে বাড়ি কেনা বা তৈরি করা আপনাকে দ্রুত স্বপ্নপূরণে সাহায্য করে ঠিকই, কিন্তু তার জন্য আপনার প্রায় তিন গুণ বেশি টাকা খরচ হয়ে যায়।
• যতদিন না আপনার ঋণ শোধ হচ্ছে, ততদিন ওই বাড়ির উপর আপনার সম্পূর্ণ অধিকার থাকছে না। ঋণ মেটাতে ব্যর্থ হলে ব্যঙ্ক আপনার বাড়ির দখল নিয়ে নেবে।
• আপনার গৃহঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২০ বছর হলে, ওই দীর্ঘ মেয়াদ ধরে আপনাকে একটা মোটা অঙ্কের মাসিক কিস্তি (EMI) দিয়ে যেতে হবে। ফলে এই ঋণ শোধ না হওয়া পর্যন্ত আপনার বেশি টাকা সঞ্চয় হবে না।
• মোটা টাকার গৃহঋণের মাসিক কিস্তির (EMI) চাপে কমে যাবে ভবিষ্যতের পুঁজিও। নিজের ঠিকানা নিশ্চিত করতে গিয়ে ভবিষ্যতের সঞ্চয়ে টান পড়বে।
ঋণ নিয়ে স্বপ্নের বাড়ির চেয়ে ভাড়ায় থাকার সুবিধা:
• গৃহঋণের মাসিক কিস্তির (EMI) চেয়ে অনেক কম টাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকা যায়। বাকি আপনার সামর্থ অনুযায়ী বিনিয়োগ করুন রিটার্ন বুঝে যে কোনও খাতে।
• গৃহঋণে বছরে অন্তত ৯% সুদ + আসল মিলিয়ে অন্তত ১৮-২০ হাজার টাকা EMI দিতে হবে। এদিকে মাসিক ১০-১২ হাজার টাকায় খুব ভাল বাড়ি ভাড়া পাওয়া সম্ভব। ফলে বাড়বে সঞ্চয়।
• হোম লোনের EMI-এর তুলনায় বাড়ি ভাড়ায় থেকে প্রতি মাসে অন্তত ৬-৭ হাজার টাকা বাঁচানো সম্ভব হবে যা ভবিষ্যতের পুঁজি বাড়াতে সহায়ক হবে।
২০ বছর পর অন্তত ২-৩টি বাড়ি কিনতে পারবেন:
আপনি যদি এখন হোম লোন নেওয়ার পরিবর্তে ভাড়ায় থেকে কোথাও টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে ২০ বছর পরে আপনার প্রায় ৩-৪ কোটি টাকার তহবিল থাকতে পারে। এটি আপনার মোট সঞ্চয়ের উপর ১৫ শতাংশ রিটার্ন ধরে হিসেব করা হয়েছে। আপনি যদি ১২% রিটার্নও পান, সে ক্ষেত্রে ২০ বছর পরে আপনার প্রায় ২.৫ কোটি টাকার তহবিল থাকবে। সুতরাং, ভাড়া বাড়িতে থাকার সময় স্মার্টভাবে বিনিয়োগ করা লোন নিয়ে নতুন বাড়ি কেনার চেয়ে বহুগুণ বেশি উপকারী হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ২০ বছর পরে, জমানো টাকা দিয়ে বাড়ি কিনে অনেকটা লাভে থাকতে পারেন। শুধু তাই নয়, এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি ২০ বছর পর ঠিক একইভাবে অন্তত ২-৩টি বাড়ি কেনার মতো পুঁজি বানিয়ে ফেলতে পারবেন।