নতুন বছরেই সুখবর রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ শতাংশ ডিএ বা মহার্ঘভাতা বাড়ছে সরকারি কর্মচারীদের। আজ পার্কস্ট্রিটে ক্রিসমাস উৎসবের সূচনা অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা এই সিদ্ধান্তের সুবিধা পাবেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, '৪ শতাংশ ডিএ-র জন্য ২ হাজার ৪০০ কোটি খরচ হবে। উপকৃত হবেন প্রায় ১৪ লক্ষ সরকারি কর্মী।' যদিও একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আবারও জানিয়ে দেন যে ডিএ পাওয়াটা সরকারের বাধ্যতামূলক নয়, ডিএ দেওয়া ঐচ্ছিক।' রাজ্য সরকারের ভাঁড়ারে টান থাকা সত্ত্বেও কর্মী ও তাঁদের পরিবারের কথা ভেবেই ডিএ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য, তাঁরা বর্তমানে ৬ শতাংশ ডিএ পান। কেন্দ্রীয় সরকার ও বেশিরভাগ রাজ্যেই ৪৬ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয় কর্মচারীদের। তাই ৪ শতাংশ বাড়ার পরেও ডিএ-র ফারাক এখনও ৩৬ শতাংশের। সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি নন তাঁরা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'আমরা এই ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি নয়। যে পদ্ধতিতে এটা ঘোষণা করা হয়েছে, সরকারি কর্মীদের এটা প্রাপ্য নয়। কোনওরকম বিজ্ঞপ্তির আগে এভাবে ঘোষণা করে দিলেন। বাকি ৩৬ শতাংশ ডিএ কবে দেওয়া হবে তার কোনও ঘোষণা নেই। আমরা বাকিটা আদায় করে নিতে জানি।'
এর আগে চলতি বছরের গোড়ার দিকে ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়। রাজ্যের বাজেট পেশ করার সময় ৩ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেই সময় ডিএ বেড়ে হয় ৬ শতাংশ।
২০২২ সালের মে মাসে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তারপর হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। তাও খারিজ হয়ে যায় রাজ্যের শীর্ষ আদালতে। তাও খারিজ হয়ে যায়। তারপরই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। বেশ কয়েকবার শুনানি হয়েছে সেই মামলার শুনানি হয়। সামনেই রাজ্য সরকারের করা স্পেশাল লিভ পিটিশনের শুনানি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, নবান্নের সামনে ধরনার অনুমতি পেল রাজ্য সরকারি কর্মীরা। আগামী ২২, ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর নবান্নের বাসস্ট্যান্ডে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে ধরনার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই অনুমতি দেন। এই ধরনার ফলে লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকারের উপর ডিএ নিয়ে আরও চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন সরকারি কর্মচারীরা।